IPL 2023: ‘এই খ্যাতি ক্ষণিকের, ব্যর্থ হলে এরাই পরে গালাগালি দেবে’, মাটিতে পা রেখে চলছেন রিঙ্কু !!

২০২৩ আইপিএলের (IPL 2023) বড় প্রাপ্তি হলেন তিনি। ট্রফি জয়ের দৌড় থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্স বিদায় নিলেও রিঙ্কু সিং হলেন দলের উজ্জ্বল তারা। রিঙ্কু হলেন এবারের আইপিএলের সেনসেশন। পাঁচটি বলে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতানো থেকে, কেকেআরের মিডিল অর্ডারের ভরসার মুখ হয়ে ওঠা, রিঙ্কু সিংয়ের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে ২০২৩ আইপিএল। দেড় মাসের এই অভিযানে রিঙ্কুর জীবন ১৮০ ডিগ্রী পাল্টে গিয়েছে। তাকে নিয়ে নেট মাধ্যমে প্রশংসা চলছে।

রিঙ্কুর (Rinku Singh) কথা শোনা গিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরাট কোহলি, সচিন তেন্ডুলকরদের মুখে। রিঙ্কু সংবাদের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন। চেন্নাই জয় করে তিনি রজনীকান্তের বাড়িতে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। এতকিছুর পরেও ২৫ বছরের আলিগড়ের ক্রিকেটারের মাথা ঘুরে যায়নি। তিনি মাটিতে পা রেখে চলেছেন। ভীষণভাবে বাস্তবটা বোঝেন। চূড়ান্ত বাস্তববাদী রিঙ্কু বলেছেন, “কোথা থেকে আমি উঠে এসেছি সেটা আমি জানি। এগুলো হচ্ছে দু মিনিটের খ্যাতি। যারা আজ প্রশংসার বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন, মাথায় নিয়ে নাচছেন, এরাই পরে গালাগালি দেবেন।”

আলিগড়ের দু কামরার কোয়ার্টার থেকে তিনি যে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন, রিঙ্কুর জীবনে সেটা সত্যি হয়েছে। আগেই তার ক্রিকেটার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা পূরণ হয়েছিল। কিন্তু সেই অর্থে তিনি ঘরে ঘরে পরিচিত মুখ ছিলেন না। ২০২৩ আইপিএলের পর পুরোপুরি ভাবে চিত্রটা বদলে গিয়েছে। চারিদিকে দাবি উঠছে জাতীয় দলের জার্সিতে রিঙ্কুকে দেখার জন্য। তাকে নিয়ে চারিদিকে এত হইচইয়ের মাঝেও রিঙ্কু নিজেকে শান্ত রেখেছে। এখনো তার পা মাটিতে রয়েছে। আগেই বলেছিলেন, জাতীয় দলে ডাক পাওয়া নিয়ে তিনি ভাবছেন না।

শুধুমাত্র তিনি নিজের কাজটুকু করে যেতে চান। কেকেআর এর ব্যাটিং সেনসেশন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “দেখুন, কেউ আমার পরিশ্রম, আমার সংগ্রাম দেখেনি। লোকে আমার সাফল্যটাই শুধু দেখেছে। এমন একটা জায়গা থেকে আমি এসেছি আমার জীবন বলতে সেখানে কিছুই ছিল না। খুব গরিব পরিবারের ছেলে আমি। আর্থিকভাবেও অস্বচ্ছল। লেখাপড়ায় আমার কোন ডিগ্রি নেই।”

রিঙ্কু বললেন, “আমাকে ঝাড়ুদারের কাজ করতে বলা হয়েছিল। যাতে কিছু টাকা পয়সা রোজগার করতে পারি বাড়ির জন্য। ওই পরিস্থিতি থেকে ক্রিকেট আমাকে বের করে এনেছে। আমি যতটা সম্ভব পারবো তার জন্য পরিশ্রম করে যাব। বিভিন্ন সময়ে প্রচুর মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আজ আমি যেখানে আছি তার পিছনে কেকেআরের অবদান অনস্বীকার্য।”

রিঙ্কুকে আইপিএলের মঞ্চে বড় শট খেলতে দেখে ক্রিকেট জনতা অভয়স্ত হয়ে গিয়েছে। তবে আলিগড়ের ব্যাটার বললেন, একইভাবে তো আমি ব্যাটিং করছি। আমার জীবন বদলে দিয়েছে এই চার, ছয় গুলো। আগে খুব কম লোক জানতেন, “এখন সকলেই জানে। আমার নামে স্টেডিয়ামে জয়ধ্বনি ওঠে। সবকিছু যেন রাতারাতি বদলে গেল। তবে আমি ভালোমতো জানি কোন জায়গা থেকে আমি উঠে এসেছি। এইসব হল দু মিনিটের খ্যাতি। যারা আজ বাহবা দিচ্ছে, আমি কাল ব্যর্থ হলেই এরা গালাগালি দেবে।”