
এখনো পর্যন্ত বর্ডার গাভাস্কার ট্রফিতে সব থেকে বেশি (১১১টি) উইকেটের মালিক হলেন অনিল কুম্বলে। ইন্দোর ও আমেদাবাদ টেস্টে রবিচন্দ্রন অশ্বিন (১০৩টি) ও নাথান লিয়ঁ (১০২টি) সেই নজির ছাপিয়ে যেতে পারেন। তবে জানেন কি, অনিল কুম্বলের ক্যারিয়ারে ২০০৩-০৪-এর ভারত- অস্ট্রেলিয়া সিরিজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল? কম্বলের ক্যারিয়ার বাঁচাতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বড় ঝুঁকি নিয়েছিলেন।
২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিল। চার টেস্টের সিরিজ খেলতে। ১-১ ড্র হয়েছিল সেই সিরিজ, বর্ডার গাভাস্কার ট্রফি ভারতের দখলেই ছিল। সেই সফরের জন্য দল নির্বাচনের সময় নির্বাচকরা অনিল কুম্বলেকে দলে নিতে চাননি। কুম্বলে সেই সময় চেনা ছন্দে ছিলেন না। তখন ভারতের অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ। তিনি জানতে পেরেছিলেন, দুটি স্পিনারকে নির্বাচকরা দলে রাখতে চাইছে না। তারা দুজন হলেন হরভজন সিং ও মুরলী কার্তিক। তখন সৌরভ উপলব্ধি করেছিল, যদি অনিল কুম্বলেকে এই সিরিজে না নেওয়া হয় তাহলে তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে।
কুম্বলের পাশে সৌরভ
সৌরভের কথায়, সেই সময় দুটি বিকল্প ছিল অধিনায়কের কাছে। হয় দলের বাইরে রাখতে হবে ছন্দে না থাকা ক্রিকেটারকে। অপর পন্থা হলো, কাঁধে হাত রেখে তার পাশে থাকার বার্তা দেওয়া। সৌরভ দ্বিতীয়টি বেছে নিয়েছিলেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে বছরের পর বছর ধরে ভালো পারফর্ম করে তবেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে কেউ খেলতে পারেন। অর্থাৎ ভালো কিছু করার দক্ষতা তার আছে। জীবনে তো উত্থান-পতন থাকবেই। এর ফলে কুম্বলের প্রতি সৌরভের অগাধ আস্থা ছিল। দল নির্বাচনী বৈঠকে যোগদান করার আগে তিনি কোচ জন রাইটকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য তিনি দলে কুম্বলেকে চান।
অনিলকে দলে নিতে অনড় মহারাজ
সৌরভ ঘন্টা দুয়েক ধরে চলা বৈঠকে দেখতে পান যে কুম্বলেকে নির্বাচকদের মধ্যে কেউই দলে চাইছে না। সৌরভ তখন বলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত দলে কুম্বলের নাম রাখা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি দল নির্বাচনী বৈঠক ছেড়ে বেরোবেন না। এরপর নির্বাচকদের তরফ থেকে সৌরভকে বলা হয়, অধিনায়ক হিসাবে কুম্বলেকে তিনি চাইতেই পারেন। কিন্তু কুম্বলে ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে না পারলে ভারত অধিনায়কের পদ থেকে সৌরভকে সরিয়ে দেওয়া হবে। সৌরভ সেই ঝুঁকিপূর্ণ শর্ত মেনে নিয়েছিলেন। বাকিটা তো ইতিহাস। কুম্বলে ওই সিরিজের তিনটি টেস্টে ২৪ টি উইকেট দখল করেছিলেন। একটি করে টেস্ট খেলে হরভজন সিং ও মুরলী কার্তিক একটি করে উইকেট দখল করেন। এতেই মহারাজের বিচক্ষণতা স্পষ্ট হয়েছে।