আইপিএল ২০২৪ক্রিকেট নিউজফুটবলক্রিকেট গসিপঅন্যান্য খেলাধুলা

শেষের পথে রাহুল দ্রাবিড়ের কোচিং ক্যারিয়ার , পরম বন্ধুকে হেড কোচের পদে বসাচ্ছেন অজিত আগরকার !!

সমর্থকদের বেশ হতাশ করেছে ভারতীয় দলের হালফিলের পারফরম্যান্স। দশ বছর হয়ে গেল টিম ইন্ডিয়া (Team India) আইসিসি আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা জেতে নি। ২০২১ ...

Updated on:

সমর্থকদের বেশ হতাশ করেছে ভারতীয় দলের হালফিলের পারফরম্যান্স। দশ বছর হয়ে গেল টিম ইন্ডিয়া (Team India) আইসিসি আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা জেতে নি। ২০২১ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনাল এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জোড়া খেতাব জয়ের সুযোগ থাকলেও দলকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল। এরপর ‘মেন ইন ব্লু’র গঠনতন্ত্র বেশ কিছু বদল করা হয়েছিল। বিরাট কোহলিকে (Virat Kohli) নেতার আসন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। রবি শাস্ত্রীকে (Ravi Shahstri) কোচের পদ ছাড়তে হয়। নতুন কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) হাত ধরে অনুরাগীরা সাফল্যের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তবে বেশি সময় লাগেনি সেই স্বপ্নের মহলে চিড় ধরতে। ২০২২ সালের এশিয়া কাপ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত মুখ থুবড়ে পড়ে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ইংল্যান্ডের কেনিংটন ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচ কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের বড় পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্রাবিড় সহ গোটা টিম ইন্ডিয়াকে ডাহাফেল বলেও অত্যুক্তি করা হয় না। ভারতীয় ক্রিকেটাররা অজিদের স্ট্র্যটেজির কোনো জবাব দিতে পারেনি। একপেশে ম্যাচে প্যাট কামিন্সের (Pat Cummins) দল ২০৯ রানের ব্যবধানে জেতে। টানা দুইবার লাল বলের ফরম্যাটে বিশ্বসেরা হওয়ার সুযোগ ভারতীয় দল নষ্ট করল।

গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরেই বিশেষজ্ঞরা কোচ দ্রাবিড়ের স্ট্র্যটেজিকে অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক বলে অভিহিত করেছিলেন। তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। সেই কত মিলিয়ে যাওয়ার আগে হতশ্রী হার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনাল ম্যাচে আবারো একবার ক্রিকেট মহলে ‘দ্রাবিড় হটাও’ রব তুলে দিয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, উইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) পারফরম্যান্স আশানুরূপ না হলে ছাঁটাই হতে পারেন তিনি। ভারতীয় দলের হাল ফেরাতে বিশ্বকাপের আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) হাতে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচ হিসাবে রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। সিনিয়র দলেও তিনি এই একই সাফল্য নিয়ে আসবেন, এই স্বপ্ন সাথে নিয়েই বিসিসিআই তাঁর হাতে কোহলি, রোহিতদের হেডস্যারের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলো। এখনো পর্যন্ত তিনটি বড় টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও দ্রাবিড়ের ভারতকে ব্যর্থ বলতেই হয়। ওভালে ভারতের পারফরম্যান্স দেখে সাধারণ সমর্থক থেকে বিশেষজ্ঞ প্রত্যেকেই আশাহত। ইতিমধ্যেই ক্রিকেটাররা সমালোচনা তীরে বৃদ্ধ হয়েছেন। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ও (Rahul Dravid) সমালোচিত হয়েছেন। এর আগে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ১০ উইকেটে পরাজয়ের পিছনে দায়ী করা হয়েছিল দ্রাবিড়ের অত্যধিক রক্ষণাত্মক গেমপ্ল্যান আর প্ল্যান-বি’র অভাবকে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল ম্যাচে হারের পিছনেও বিশেষজ্ঞরা এই একই কারণ খুঁজে পাচ্ছেন।

টেস্ট র‍্যাঙ্কিং-এ এক নম্বরে থাকা রবিচন্দ্রণ অশ্বিনকে (Ravichandran Ashwin) অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে না খেলিয়ে প্রথম একাদশে দ্রাবিড় চার পেসারকে রেখেছিলেন। ম্যাচে এই পরিকল্পনা ব্যুমেরাং হয়ে ফেরে। যেখানে চতুর্থ ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষের নাথান লিয়ঁ টিম ইন্ডিয়ার মেরুদন্ড ভাঙলেন, সেখানে পাঁচ দিন রিজার্ভ বেঞ্চে কাটাতে হয়েছে বিশ্বের সেরা অফ স্পিনারকে। ম্যাচ শেষে এই বিষয়ে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) দ্রাবিড়কে প্রশ্ন করেন। তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়াও টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিং (Ricky Ponting) পর্যন্ত ভারতের স্ট্র্যাটেজি দেখে বলতে বাধ্য হয়েছেন, “মনে হচ্ছে প্রথম দিনের কথা ভেবে ভারত দল সাজিয়েছে। কিন্তু টেস্ট ম্যাচ তো ৫ দিন ধরে হবে।”

সৌরভকে দেওয়া হতে পারে দলের দায়িত্ব-

এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের গোপন ক্যামেরার সামনে বেফাঁস মন্তব্য করে মুখ্য নির্বাচক পদে থাকা চেতন শর্মা (Chetan Sharma) বেকায়দায় পড়েছিলেন। পদ থেকে তাকে ইস্তফা দিতে হয়। এই ঘটনার পর মুখ্য নির্বাচকের পদ কয়েক মাস শূন্য পড়েছিল। অবশেষে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অজিত আগরকারকে (Ajit Agarkar)। আগরকারের আগমনের সাথে সাথে পরিবর্তন দেখা যেতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট কোচের পদে।

টিম ইন্ডিয়ার (Team India) পারফরম্যান্সে গ্রাফ উইন্ডিজ সফরে ওঠানামা করলে রাহুল দ্রাবিড়কে (Rahul Dravid) সরানো হতে পারে। তবে বিশ্বকাপের আগে টিম ইন্ডিয়া নতুন করে বিদেশি কোচের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার পথে নাও হাঁটতে পারে। বরং ‘প্রিন্স অফ ক্যালকাটা’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) কোচ হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। গত বছর পর্যন্ত তিনি বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ফলে দলের খুঁটিনাটি বিষয়ে তিনি ভালোভাবেই জানেন। ফলে দ্রাবিড়ের ছেড়ে যাওয়া আসনে মহারাজ বসলে বিশেষ সমস্যায় পড়তে হবে না।

সৌরভকে (Sourav Ganguly) ভারতীয় দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরানোর পর রাহুল দ্রাবিড়কে (Rahul Dravid) নেতা করা হয়েছিল। কোচ হিসাবে তাদের ক্ষেত্রে উল্টোটা দেখা যেতে পারে। অর্থাৎ রাহুলের পর সৌরভ টিম ইন্ডিয়ার (Team India) হট সিটে বসতে পারেন। বাংলার মহারাজ বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে সফল হওয়ার ফর্মুলা জানেন। ২০০৩ সালে ফাইনাল পর্যন্ত দলকে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব তার দখলে রয়েছে।

অধিনায়ক হিসেবে জিততে পারেননি ট্রফি। কোচ হিসাবে তিনি সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নিতে চাইবেন। নবনিযুক্ত মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকারের (Ajit Agarkar) সাথে সৌরভ (Sourav Ganguly) বহু ক্রিকেট খেলেছেন। দুজনের মধ্যেকার সম্পর্ক খুব ভালো। একসাথে কাজ করতে দুজনের কোনো রকম সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে এখন সর্বজনবিদিত টিম ইন্ডিয়ার (Team India) তারকা বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সাথে সৌরভের মনকষাকষির কথা। কি করে এই ফাটল জোড়া লাগবে সেইদিকে সকলের নজর থাকবে।

About Author
2.