Under-19 World Cup 2024: আবারও অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজয় স্বীকার ভারতের। গত বছর একদিনের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার স্বীকার করেছিল ভারত। সেই হারের বদলা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও আবারও আইসিসি প্রতিযোগিতার ফাইনালে হারল ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ের কাছে যেন ধোপে টিকল না ভারতের ব্যাটিং। যার দরুন তীরে এসে তরী ডুবল ভারতের। ৭৯ রানে ভারতকে হারিয়ে চতুর্থ বারের জন্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ (Under 19 World Cup) চ্যাম্পিয়ন হলো অস্ট্রেলিয়া।
খেলার শুরুতেই টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিউ ওয়েবগেন। এর কারণ, প্রতিযোগিতার ১৪টি ফাইনালে মাত্র চার বার প্রথমে ব্যাট করা দল জিতেছে। নিজেদের দলের শক্তির কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত ওয়েবগেনের। প্রথমে রান করার যে পরিকল্পনা ওয়েবগেন করেছিল সেই পরিকল্পনাই সঠিক প্রমাণিত হল তাদের। খেলার শুরুটা অস্ট্রেলিয়ার ভালো না বলেও পরের দিকে ফর্মে আসে তারা। ওপেনার হ্যারি ডিক্সন বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন। বাঁ হাতি পেসার নমন তিওয়ারিকে নিশানা করেন তিনি তাকে সঙ্গ দেন অধিনায়ক ওয়েবগেন। দু’জনে জুটি বেঁধে রান বাড়াতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ৭৮ রানের জুটি হয় দু’জনের মধ্যে।
ভারতকে (Under 19 World Cup) ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন তিওয়ারি। দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে ৪৮ রানের মাথায় ওয়েবগেন এবং তারপর ৪২ রানের মাথায় ডিক্সনকে ঘরে ফেরান তিনি। তবে ফাইনালে নজর কেড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যাটার হরজস সিংহ। এই বারের প্রতিযোগিতায় একটি ম্যাচে রান না পেলেও কিন্তু ফাইনালে রান পেয়েছেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে রায়ান হিকসের সঙ্গে ৬৬ রানের জুটি বাঁধেন হরজস। ভারতের দুই বাঁ হাতি স্পিনার মুশির খান ও সৌমি পাণ্ডের বিরুদ্ধে হাত খুলেছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে একমাত্র অর্ধশতরান ছুঁয়েছেন হরজস। যদিও ৫৫ রানের মাথায় তাঁকে আউট করেন পাণ্ডে। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান অলিভের পিক। তাঁকে আউট করতে পারেননি ভারতীয় বোলাররা। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫৩ রান করে অস্ট্রেলিয়া, যা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথমে ব্যাটিংয়ে করা সর্বোচ্চ রান। ভারতের হয়ে লিম্বানী ৩টি উইকেট, তিওয়ারি ২টি উইকেট এবং পাণ্ডে ও মুশির ১টি করে উইকেট নেন।
রান তুলতে মাঠে নেমে পড়েন ভারতীয় ক্রিকেটাররা (Under 19 World Cup)। কিন্তু রানের গতি ছিল খুবই কম। মাত্র ৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় তারা। আউট হন আর্শিন কুলকর্ণি। তাঁকে ফেরান কলাম ভিডলার। অস্ট্রেলিয়ার সামনে সেইভাবে ব্যাটিং করতে পারছিলেন না ভারতীয় ব্যাটারেরা। পিচের পেস ও বাউন্স ব্যবহার করেই ভারতীয় ব্যাটারদের ঘায়েল করেন অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা। রানের গতি এতটাই কম ছিল যে ১০ ওভারে মাত্র ২৮ রান হয়। মুশির রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করলেও ২২ রানের মাথায় মাহলি বিয়ার্ডম্যানের বলে আউট হন তিনি। ৪০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে গেলে ম্যাচ ভারতের দিকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নেন অধিনায়ক উদয় সাহারান।
আরও পড়ুন: Hardik Pandya: ক্যারিয়ার সংকটে হার্দিক পান্ডিয়ার, রঞ্জি কাঁপানো এই প্লেয়ার ছিনিয়ে নেবেন জায়গা !!
সেমিফাইনালে দলকে রক্ষা করলেও ফাইনালে পারলেন না উদয়। বিয়ার্ডম্যানের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে ৮ রানের মাথায় আউট হন তিনি। সেমিফাইনালের আরও এক নায়ক সচিন ধাসও ব্যর্থ হন ফাইনালে। মাত্র ৯ রানেই আউট হন তিনি। অসি স্পিনার রাফ ম্যাকমিলানের প্রথম বলে আউট হলেন তিনি। ৬৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। যত সময় অতিবাহিত হচ্ছিল ততই চাপ বাড়ছিল ভারতের উপর। উপরন্তু হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না ভারতীয় ব্যাটারেরা। রান পাননি প্রিয়াংশু মোলিয়া ও আরাভেল্লি অবনীশও। ৯১ রানে ৬ উইকেট পড়ে যায় ভারতের। সেখান থেকে ম্যাচ ঘোরানোর কোনও সুযোগই আর ছিল না। আদর্শ সিংহ ৪৭ রান করলেও তা কাজে আসেনি। শেষ দিকে মুরুগান অভিষেক হারের ব্যবধান কিছুটা কমালেও। শেষ পর্যন্ত ভারতের ইনিংস শেষ হয় ১৭৪ রানে।