East Bengal: মোহনবাগান এবং ইস্ট বেঙ্গলের (East Bengal) দ্বন্দ্ব বহু বছর, বহু দিনের… দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন টা আলাদা করে বলার কিছু নেই। ঝগড়া, ঝামেলা, বিতর্ক লেগেই রয়েছে। আর আগামীতেও টা চলতে থাকবে তা বলা যায়। কিন্তু এই দ্বন্দ্বের মাঝে এমন কী ঘটনা ঘটালেন সৌরভ পালোধি এবং মির্চি অগ্নি? যার কারণে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল দুই দলের সমর্থকদের থেকে কটাক্ষ শুনছেন। বিস্তারিত জেনে নিন Kheladhular Jogot-এর এই প্রতিবেদনে।
সম্প্রতি মুম্বই সিটিকে ফাইনাল খেলায় হারিয়ে লিগ শিল্ড জয় করেছে মোহনবাগান। ঠিক তারপরই মোহনবাগান সমর্থক সৌরভ এবং ইস্ট বেঙ্গল সমর্থক অগ্নি ওরফে অগ্নিজিৎ সেনের মজার ছলে খুনসুটির ছাপ পাওয়া যায় একটি বিজ্ঞাপনে। সেই বিজ্ঞাপনে ইস্ট বেঙ্গলের জার্সিতে বার্নল লাগাচ্ছিলেন সৌরভ। আর তা দেখে স্বাভাবিক ভাবে সেটা বেজায় ক্ষেপে গিয়েছেন ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকরা। তাঁদের মতে জার্সিকে অপমান করা হয়েছে এভাবে। তার পাশাপাশি বিরক্ত হয়েছে অন্য শিবিরও। জনরোষের মুখে পড়ে ক্ষমা চাইলেও বরফ গলেনি।
এদিন ক্ষমা চেয়ে সৌরভ পালোধি লেখেন, “আমার আর অগ্নির একটা ভিডিয়োর প্রোমো নিয়ে সবাই খুব রেগে গেছেন জানি। যদিও ভিডিওটা গোটা দেখতে পেলে মত পাল্টে যেত। তবে সেটা আর আপনাদের এগিয়ে আসার জন্য আপাতত হল না। তবে আমি যদি অসম্মান করে থাকি আমি অনুতপ্ত। নিছক মজাই ছিল, তবে আবারও বলছি গোটা ভিডিয়োর একটা অংশ। হ্যাঁ এটা ঠিক যে জার্সি নিয়ে মজা করাটা উচিৎ হয়নি। অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন। আমি নিজে হয়তো মোহনবাগান সমর্থক কিন্তু আমি কখনই মাঠের বাইরে ইস্টবেঙ্গল বিরোধী নই। আমার বাড়ি ভর্তি ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। মাঠের বাইরের এই ঝামেলার চিরকাল বিরোধিতা করেছি। অদ্ভুত ভাবে লোটা মাচা করে ঝামেলা কিংবা একে অপরকে নোংরা গালি এতো রোজ দেখতেই পাচ্ছি। এ উভয় দলের সমর্থকরাই করে থাকে। সেটাও ঠিক না। কাঁটা তার বলে মজা করা কিংবা রেফিউজি বলা, এসবের চিরকাল বিরোধিতা করে এসেছি আগামীতেও করবো, তবে আমি আবারও বলছি প্রচুর ইস্টবেঙ্গল সমর্থক আমাদের দলের নাম্বারে, আমার মেসেঞ্জারে নানান খারাপ কথা লিখছেন, তারা কষ্ট পেয়েছেন বুঝেছি, আমি সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।”
অন্যদিকে অগ্নি ইস্ট বেঙ্গলের জার্সি পরা ছবি দিয়েই লেখেন, “ভুল স্বীকার করায় কোন লজ্জা আমার কোনদিনই নেই। সমস্ত সমর্থকদের কাছে এবং সর্বোপরি আমার হৃদয়ের টুকরো দলের কাছে নতমস্তকে ক্ষমা চাইছি (যদিও উদ্দেশ্য ছিল শুধু নির্মল মজা।) বারুদ মশালের আগুন আমার কাছেও আবেগ, জার্সি মানে আমার কাছেও লড়াইয়ের প্রতীক। এটুকুই বলতে পারি ভালো, খারাপ নির্বিশেষে লাল হলুদ ছিলাম, আছি, থাকব। জয় ইস্টবেঙ্গল।”
ক্ষুব্ধ ইস্ট বেঙ্গল সমর্থন লেখেন, “এটাকে ক্ষমা চাওয়া বলে না। নির্লজ্জের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করা বলে। প্লিজ CPM-এর মিটিং-মিছিলে যেও না। ভোটের বাজারে ইভিএম ভেবে কেউ টিপে দিয়ে চলে যাবে। হয়তো কোনও ইস্টবেঙ্গলিয়ান CPM কর্মীই এই কাজ করে দিল। কিছু বলতেও পারবে না।’ আরেক ব্যক্তি রাগ উগরে লেখেন, “তুমি আর যাই হও ভাই, মানসিকতায় বামপন্থী নও। যদি সত্যিই তা হতে তাহলে এত বিশাল সংখ্যক মানুষের আবেগ নিয়ে এরকম চুড়ান্ত নোংরামো করার প্রবৃত্তি আসত না। যা করেছ, তার ক্ষমা হয় না। কৃতকর্মের জন্য এখন যা যা বিশেষ্য আর বিশেষণ ধেয়ে আসছে সেগুলো উপভোগ করার মানসিক শক্তি অর্জন করে মানুষ হয়ে ওঠো। বাচ্চা ছেলে, তাই হয়ত ইতিহাস জানো না। পঁচাত্তরে পাঁচ গোল খাবার পর তুমি যাদের হয়ে আজ বার্নল লাগাতে এসেছিলে তাদেরই এক সমর্থক, এই কলকাতারই, নির্মম পরাজয়ের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। ঘটনাচক্রে তাঁরও পদবী ছিল পালোধি। সেদিন কিন্ত তাঁর পরিবারকে কেউ বার্নল লাগাতে যায়নি, বরং যাদেরকে আজ বার্নল লাগালে ওই মৃত্যুশোক ছুঁয়ে গেছিল তাদেরকেও। ইতিহাসের চাকা আবার ঘুরবে। আশা করব, সেদিন সৌরভ পালোধির পরিণতি যেন উমাকান্ত পালোধির মত না হয়। আগে মানুষ হয়ে ওঠো, তারপর নয় বামপন্থী হবার চেষ্টা করো।”
তৃতীয় ব্যক্তি লেখেন, “আমি তো একদা বলেইছিলাম, সেই যে “গোলন্দাজ” বলে সিনেমাটায় কিছু রংচং মাখা, বড় জুলফিওয়ালা ইংরেজ “ঠুমি ফুটবল খেলিবে?” বলতে বলতে আপনাকে বল বানিয়ে লাথিয়েছিল, সেই থেকে আপনার মাথাটা পুরো গেছে।’ চতুর্থজনের মতে “ফুটেজের একটা লিমিট থাকা দরকার। ফুটেজ খেতে খেতে অধঃপতনের শেষ সীমায়।”
কেউ আবার তাঁদের সমর্থন করে লেখেন, “দারুণ লেখাটা। তোমার প্রতি ভালোবাসাটা একই থাকবে। কারণ যারা তোমায় কাছ থেকে দেখেছে বা চেনে তারাই জানে আসলে তুমি কেমন। আর সেই দলে আমিও পড়ি। তাই আমি জানি এটা নিছক একটা মজা ছিল। কিন্তু হ্যাঁ, বাঙালির আবেগের এই দুদল। যদিও এখন আর আগের মতো গরিমা নেই। তোমার পাশে আছি। মানুষ মাত্রেই ভুল করে। আর ভুলের ক্ষমা যারা চাইতে পারে তারাই প্রকৃত মানুষ।”
আরও পড়ুন। IPL 2024: লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ফ্যানসদের জন্য এলো সুখবর, আবার মাঠে ফিরচেন ময়ঙ্ক যাদব !!