২০০৭, ২০১১, ২০১৫, ২০২২! ১৫ বছর ধরে বিশ্বকাপের পাঁচ অঘটন, ঘটক সেই আয়ারল্যান্ড…

২০২২ এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ গ্রুপে ইংল্যান্ড বনাম আয়ারল্যান্ডের ম্যাচে ইংল্যান্ড কে হারিয়ে দিল আয়ারল্যান্ড। বৃষ্টির কারণে ডাক ওয়ার্থ লুইস নিয়মে ৫ রানে জেতে আয়ারল্যান্ড। ২০২২ এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে ঘটা এই ঘটনাটিকে প্রথম অঘটন বলে অনেকে মনে করছেন। বিশ্বকাপ মঞ্চে আয়ারল্যান্ড মাঝে মাঝে অনেক বড় বড় দলের কাছেই ত্রাস হয়ে ওঠে ।
২০০৭ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে চমক দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। গোটা বিশ্ব জেনে গিয়েছিল আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটকথা। সেই ম্যাচে টসে জিতে পাকিস্তানকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। পাকিস্তানের হয়ে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কামরান আকমলের ২৭ রান এবং ইমরান নাজিরের ২৪ রান ছাড়া কোনও পাকিস্তানি ব্যাটার ২০ রানের গণ্ডি টপকাতে পারেননি। ইউনিস খান শূন্য রানে আউট হন। অধিনায়ক ইনজামাম উল হকের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১ রান। মহম্মদ ইউসুফ করেন ১৫ রান। আয়ারল্যান্ডের আন্দ্রে বোথা ৮ ওভার বল করে ৫ রান খরচ করে ২ উইকেট নেন। বয়ড রানকিন নেন ৩ উইকেট। পরিনামে ১৩২ রানে শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস।
পাকিস্তানের বোলাররা ওই কম রান নিয়েও মাঠে লড়াই করার চেষ্টা করেছিলেন। মহম্মদ সামি ৩ উইকেট নিয়েছিলেন। কিন্তু আইল্যান্ডের ব্যাটার নীল ও’ব্র্যায়েনের ১০৭ বলে ৭২ রানের দাপটে পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। সেদিন আয়ারল্যান্ড ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল।
তারপর ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড হারিয়ে দিয়েছিল ইংল্যান্ডকে। ২০০৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানো যে অঘটন নয়, সেটাই বুঝিয়ে দেন আইরিশরা। বেঙ্গালুরুর ছিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩২৭ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। জবাবে সেই বিশাল রান তাড়া করে ম্যাচ জেতে আয়ারল্যান্ড। আয়ারল্যান্ড দলের হয়ে কেভিন ও’ব্র্যায়ান ৬৩ বলে ১১৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন। আয়ারল্যান্ড শেষ ওভারে ম্যাচ জিতেছিল।
২০১৫ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড হারিয়ে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ঐদিন দুই দল মিলে ৬০০ রানের উপর করেছিল। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছিলেন আইরিশ ক্রিকেটাররা। প্রথমে ব্যাট করে ৩০৪ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। লেন্ডল সাইমন্স ১০২ রান ও ড্যারেন স্যামি করেন ৮৯ রান। কিন্তু সেই রান ক্যারিবিয়ান শিবিরকে জয় দিতে পারেনি। ব্যাটে নেমে সহজেই ম্যাচ জিতে নেয় আয়ারল্যান্ড। সেদিন আয়ারল্যান্ডের দল ৪.১ বল আর ৪ উইকেট হাতে নিয়ে জিতেছিল। আয়ারল্যান্ডের হয়ে পল স্টার্লিং ৯২ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন। তার যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন এড জয়েস ৮৪ রান এবং নীল ও’ব্রায়েন ৭৯ রান করে।
২০২২ এ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় আয়ারল্যান্ড। সেই হারের পরেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় দু’বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দল। ২০২২ এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আবার মূল পর্বে ইংল্যান্ডকে হারায় আয়ারল্যান্ড। আয়ারল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ১৫৭ রান করে। জবাবে ব্যাটে নেমে ইংল্যান্ডের রান যখন ১৪.৩ ওভারে ৫ উইকেটে হারিয়ে ১০৫ তখনই বৃষ্টির জেরে খেলা বন্ধ হয়। তখনও ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য ৩৩ বলে ৫৩ রান করতে হত। কিন্তু বাধ সাজলো বৃষ্টি যার কারণে আর খেলা শুরু করা গেল না। এর পরেই ঘোষণা করা হয় ডাক ওয়ার্থ লুইস নিয়ম, তার জন্য ৫ রানে জয়ী হয় আয়ারল্যান্ড।