মেসির ম্যাজিক এবং আলভারেসের জাদু! ক্রোয়েশিয়াকে উড়িয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা !!

রাতের অন্ধকারে গ্যালারি ভরা আলোয় লিওনেল মেসি বনাম লুকা মদ্রিচের দুর্দান্ত লড়াই দেখা গেল। এরাই দুই সেরা খেলোয়াড় আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া এই দুই দলের। ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে মেসির আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছে। মেসি নিজে এই ম্যাচে গোল করলেন এবং গোল করালেন। ফলে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনা ৩-০ গোলের ব্যবধানে নাটকীয় জয় পেল। পেনাল্টি থেকে দলের প্রথম গোলটি এসেছে, মেসি কিক করেন, বাকি আলভারেসের দুটি গোল।

এই ম্যাচে প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া প্রথম ৩০ মিনিট ক্রোয়েশিয়া বলের দখল বেশি রেখেছিল। গোল করার একাধিক সুযোগ পেয়েও তারা বল নেটে ঠেকাতে পারল না। অন্যদিকে মেসিরা প্রথম ৩০ মিনিট পিছিয়ে থাকলেও বাকি ১৫ মিনিটে বদলে দিল খেলার রং। আর্জেন্টিনা এগিয়ে গেল জোড়া গোল করে। গতবারের রানার্স টিম এখান থেকেই ছিটকে গেল। দলে আর ফিরতে পারল না। মদ্রিচদের এবারের ফিফা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হারিয়ে মেসিরা ফাইনালে উঠলো। আর্জেন্টিনা এই পর্যন্ত ৬ বার সেমিফাইনাল খেলে তারা ৬ বারই জিতলো।

মেসিকে এই ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াও অন্য দলের মতো রেড জনে রেখেছিল। মেসির পায়ে বল এলেই তাকে আটক করত তিন থেকে চারজন ফুটবলাররা। কিন্তু মেসিকে কে আটকায়? যত সময় যাচ্ছিল মেসি ততই যেন তার প্রতিভা বের করছিলেন। গোল করালেন এবং গোলের সুযোগ তৈরি করলেন। এই বিশ্বকাপটাই হয়তো শেষ বিশ্বকাপ মেসির, তাই তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছেন নিজের দেশকে একটি ট্রফি তুলে দিতে।

ক্রোয়েশিয়া যদিও ম্যাচের শুরুটা ভালো করে। ব্রাজিলকে কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে মুখিয়ে ছিল অন্তিম সফলতার জন্য। কিন্তু আক্রমণাত্মক ফুটবল আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে খেললেও তারা শেষ হাসি হাসতে পারল না। তারা গোলের সুযোগ তৈরি করলেও পারলো না খাতা খুলতে।

৩৩ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনা খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। আলভারেস বক্সের মধ্যে ফাউল পান এবং রেফারি পেনাল্টি দেন। তাদের এখানেই বাজিমাত, মেসি গোল করেন পেনাল্টি শটে। মেসির পঞ্চম তম গোল এবারের বিশ্বকাপে। তার ৬ মিনিট পরে আলভারেস অসাধারণ গোল করেন। অর্থাৎ ম্যাচের প্রথমার্ধেই আর্জেন্টিনা জোড়া গোল করে। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে মেসিরা বিরতির সময় কাটান।

আর্জেন্টিনা এরপর ক্রোয়েশিয়া ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। কিন্তু আর্জেন্টিনা নিজেদের ডিফেন্স মজবুত রাখে। ফলে ক্রোয়েশিয়া গোলের মুখ দেখতে পারলো না। বরং শেষের দিকে যত সময় যাচ্ছিল ততই ক্রোয়েশিয়ার উপর চাপ বাড়ছিল। আর্জেন্টিনার হয়ে ৭০ মিনিটের মাথায় আলভারেস আবার গোল করেন। ম্যাচের এটা তৃতীয় গোল। মেসিরও প্রচুর অবদান ছিল এই গোলটির পিছনে। গোল করার জন্য তিনি তাকে বল সাজিয়ে গুছিয়ে দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে, আবারও একবার ক্রোয়েশিয়াকে খালি হাতে ফিরতে হলো। আগের বার তারা হেরেছিল ফাইনালে গিয়ে। এবার তাদের লড়াই সেমিফাইনালেই শেষ হলো। ৩-০ গোলের ব্যবধানে জিতে মেসিরা ফাইনালে(Qatar World Cup Final) পৌঁছে গেলেন।