আইপিএল ২০২৫-এ দুর্দান্ত পারফর্ম করার পরও শ্রেয়স আইয়ারকে (Shreyas Iyer) ইংল্যান্ড সফরের জন্য টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির অনুপস্থিতিতে তার মতো একজন অভিজ্ঞ এবং ফর্মে থাকা অধিনায়কের বাদ পড়া নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন ভক্তরা। অনেকেই মনে করছেন, গৌতম গম্ভীরের একরোখা মনোভাবই তার সুযোগ কেড়ে নিয়েছে। এমনকি রঞ্জি ট্রফিতেও দারুণ পারফর্ম করার পরও তাকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন নির্বাচক মণ্ডলীর উপর।
রোহিত-কোহলির অবসরের পর কে সামলাবে ভারতের ব্যাটিং অর্ডার?
২০২৫ সালে রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি ধাপে ধাপে সব ফর্ম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার পর ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে বড় ফাঁক তৈরি হয়েছে। এই ফাঁক পূরণে প্রয়োজন এমন একজন ব্যাটসম্যান, যিনি শুধু অভিজ্ঞ নন, একই সঙ্গে দলে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাও রাখেন।
অবশ্যই দেখবেন: ইংল্যান্ড সফরের আগে বড় চমক! পৃথ্বী শ ফিরছেন জাতীয় দলে? উঠে এলো গোপন তথ্য!
এই প্রসঙ্গে শ্রেয়স আইয়ারের (Shreyas Iyer) নাম অনিবার্যভাবে উঠে আসে। তার টেকনিক, টেম্পারমেন্ট এবং দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতা তাকে একজন উপযুক্ত উত্তরসূরি করে তোলে। কিন্তু ভারতীয় দল যখন ইংল্যান্ড সফরের জন্য ২০ জুন থেকে শুরু হতে চলা পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের স্কোয়াড ঘোষণা করল, তখন সবার চোখ কপালে ওঠে—আইয়ারের নাম কোথাও নেই।
শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) : পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে কেন তিনি উপযুক্ত
শ্রেয়স আইয়ার শুধুই এক জন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান নন। তার নেতৃত্বগুণ ও স্ট্যাটিস্টিকসও তাকে এই মুহূর্তে ভারতের অন্যতম সম্ভাবনাময় ব্যাটার করে তুলেছে।
রঞ্জি ট্রফি ২০২৪-২৫ পারফরম্যান্স:
- ম্যাচ: ৫
- মোট রান: ৪৮০
- গড়: ৬৮.৫৭
- সেঞ্চুরি: ২
- হাফ-সেঞ্চুরি: ৩
আইপিএল ২০২৫ অধিনায়কত্ব:
- দল: পাঞ্জাব কিংস
- ফাইনাল অবধি পৌঁছে দেওয়া
- গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ৫০+ ইনিংস
- কৌশলী ফিল্ড সেটিং এবং বোলিং রোটেশন
এছাড়া, অতীতে তিনি ২০২০ সালে দিল্লি ক্যাপিটালসকে প্রথমবারের জন্য ফাইনালে তুলেছিলেন এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক হিসেবেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তার অভিজ্ঞতা, ফর্ম এবং অধিনায়কত্বের কৃতিত্ব সব দিক থেকেই তিনি ছিলেন অন্যতম সেরা বিকল্প।
গৌতম গম্ভীরের মন্তব্য: দায়িত্ব এড়ানো নাকি চাপে পড়া?
যখন শ্রেয়স আইয়ারকে (Shreyas Iyer) বাদ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তখন টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ গৌতম গম্ভীর সাফ জানিয়ে দেন—“আমি নির্বাচক নই”।
তার বক্তব্য:
“আমি মনে করি একজন খেলোয়াড় যদি ফর্মে থাকে, তাকে অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। তবে আমাদের হাতে কেবলমাত্র ১৮ জন ক্রিকেটার বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে।”
এই কথাতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে তিনি সরাসরি নির্বাচন প্রক্রিয়ার দায় নিচ্ছেন না। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি একজন ফর্মে থাকা খেলোয়াড় দলের জন্য এতটাই উপযুক্ত হন, তবে কেন সেই সুপারিশটিও এল না কোচের তরফ থেকে?
ভক্তদের ক্ষোভ: সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভের বিস্ফোরণ
শ্রেয়স আইয়ারকে (Shreyas Iyer) দলে না রাখার সিদ্ধান্তের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে। অনেকেই গম্ভীরের ‘জেদ’ ও ‘পছন্দের খেলোয়াড় বেছে নেওয়া’র প্রবণতার বিরুদ্ধে মুখ খোলেন।
অবশ্যই দেখবেন: এই ব্যর্থ খেলোয়াড়ের কারণেই বিরাটকে ছেড়ে দিল দিল্লি! প্রথম নিলাম নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য বিজয় মালিয়ার
কিছু সাধারণ ভক্ত প্রতিক্রিয়া:
- “আইয়ারের মতো খেলোয়াড়কে আপনি বাদ দেন, তারপর বলেন আপনি নির্বাচক নন?”
- “রোহিত-কোহলি চলে গেলে কে ব্যাটিং অর্ডার সামলাবে, টেস্ট ম্যাচ তো T20 নয়!”
- “গম্ভীর নিজের পছন্দের বাইরে কাউকে চান না, এটা আগেও দেখেছি কেকেআরে।”
ভারতীয় দল কী হারাল?
শুধু একজন ব্যাটসম্যান নয়, শ্রেয়স আইয়ার এই মুহূর্তে ভারতের জন্য তিনটি দিক থেকে মূল্যবান হতে পারতেন:
১. স্থিতিশীল মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান:
যে কোনও পরিস্থিতিতে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারেন। কঠিন পিচেও খেলার অভিজ্ঞতা আছে।
২. দক্ষ অধিনায়ক:
আইপিএল এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। দলকে শান্তভাবে পরিচালনা করতে পারেন।
৩. আক্রমণাত্মক মানসিকতা:
প্রয়োজনমতো রানরেট বাড়াতে পারেন। টেস্ট ক্রিকেটেও টেম্পোরারি অ্যাটাকিং অ্যাপ্রোচ দরকার পড়ে, বিশেষত ইংল্যান্ডে।
নির্বাচক কমিটির ভূমিকা কি যথাযথ ছিল?
যদিও গম্ভীর বলছেন তিনি নির্বাচক নন, বাস্তবে কোচ এবং নির্বাচকদের মধ্যে সমন্বয় ছাড়া এমন বড় ট্যুরে দল গঠিত হয় না। তাই একে গম্ভীরের সিদ্ধান্ত থেকে পুরোপুরি মুক্ত করা যায় না।
নির্বাচক কমিটির বক্তব্য এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি, কিন্তু যদি ফর্ম, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্ব সব মিলিয়ে বিচার করা হয়, তাহলে আইয়ারের বাদ পড়া একপ্রকার অবিচার হিসেবেই দেখছে ক্রিকেটবিশ্বের একটা বড় অংশ।
শ্রেয়স আইয়ারের ভবিষ্যৎ কী?
শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) এখনো অনেক তরুণ। তার সামনে অনেক টেস্ট সিরিজ, অনেক আইপিএল আসছে। তবে ইংল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে খেললে তার অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ হত।
গম্ভীর বা নির্বাচক কমিটি ভবিষ্যতে যদি ভুল স্বীকার না করে, তাহলে হয়তো এই ধরনের প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা বারবার উপেক্ষিত হবেন। আর এমনটা হলে, ভারতের টেস্ট ব্যাটিং ভবিষ্যত কতটা স্থিতিশীল হবে, তা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যাবে।
অবশ্যই দেখবেন: শেষ অজিত আগারকরের অধ্যায়! ৬ টেস্ট খেলা এই চমকপ্রদ মুখ হচ্ছেন ভারতের নতুন প্রধান নির্বাচক!
⚽ ক্রীড়া বিভাগ | 🔗 লিংক |
---|---|
🏏 ক্রিকেট নিউজ | Cricket News |
🔥 আইপিএল ২০২৫ | IPL 2025 |
📸 ক্রিকেট ভাইরাল | Cricket Viral |
🗣️ ক্রিকেট গসিপ | Cricket Gossip |
🏆 চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ | Champions Trophy 2025 |
⚽ ফুটবল নিউজ | Football News |
🎯 অন্যান্য খেলাধুলা | Other Sports |