IPL 2023 : ‘হেরো’ দিল্লিও তুবড়ে দিল KKR-কে! শাহরুখের নাইটদের বিধ্বস্ত করেই প্ৰথম জয় সৌরভদের !!

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স (MI) ম্যাচ থেকে ট্রেন্ডটা শুরু হয়েছিল। ধারাবাহিকতার অভাবে ভোগা ইশান কিষাণ (Ishan Kishan), সূর্যকুমার যাদবকে (Surya Kumar Yadav) কেকেআর ফর্মে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এবার এমন একটা দলের কাছে নাইটরা শোচনীয় ভাবে পরাস্ত হল। টুর্নামেন্টের প্রথম পাঁচটি ম্যাচে যারা হেরে বসেছে, যাঁদের সরকারিভাবে অঙ্কের হিসাবে প্লে অফের সম্ভবনা মুছে যেত নাইট ম্যাচ হারলেই।
সেই দিল্লি ক্যাপিটালসের (DC) কাছে হেরে কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) হারের হ্যাটট্রিক করে ফেলল। এতদিন পর্যন্ত ব্যাটিং লাইন আপ কেকেআরের মান রক্ষা করে যাচ্ছিল। রানের মধ্যে ছিলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার (Venkatesh Iyer), রিঙ্কু সিং (Rinku Singh), নীতিশ রানা (Nitish Rana), রহমনুল্লাহ গুরবাজ (Rahmanullah gurbaj) এরা সকলেই। তবে বৃষ্টি ভেজা ম্যাচে এই ব্যাটিংই প্রথমার্ধেই কেকেআরকে শুইয়ে দিল। বৃহস্পতিবার শোচনীয় ব্যাটিংয়ের খেসারত দিয়েই রানে হারলো কেকেআর।
সম্ভব ছিল না ১২৮ রানের আতুপুতু টার্গেট ডিফেন্ড করা। অবশ্য সেটা হয়নি। পৃথ্বী শ, ডেভিড ওয়ার্নার ঝড়ো ইনিংস শুরু করার পরেই কার্যতো তারা স্পষ্ট হয়ে যায় যে কোনভাবেই কেকেআরের পক্ষে জেতা সম্ভব নয়। তারপর কিছুটা হোঁচট খেয়ে দিল্লি তাদের লক্ষ্যে পৌঁছালো। পাওয়ার প্লের মধ্যে পৃথ্বী শ-কে ফিরিয়ে দেন বরুন চক্রবর্তী। পরপর দুটি ওভারে ক্যাপ্টেন নীতিশ রানা এবং অনুকূল রয় মিচেল মার্শ এবং ফিল সল্টকে ফিরিয়ে দিয়ে সামান্য পরিমাণ আশা জাগিয়েছিলেন। তবে ওয়ার্নার দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে দেন হাফ সেঞ্চুরি (৪১ বলে ৫৭) করে। ১৪ তম ওভারে ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে দেন বরুণ চক্রবর্তী। তবে এতই অল্প ছিল টার্গেট যে দিল্লি চাপে পড়লেও জয় নিয়ে তাদের কোনরকম সংশয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়নি।
তাও যে এই ম্যাচটি শেষ হবার পর্যন্ত গড়াল, তার অনেকটাই কৃতিত্ব প্রাপ্য করেছেন ক্যাপ্টেন রানা এবং অনুকূল রয়। ডেথ ওভারে টাইট বোলিং করে নাইটদের কার্যত ম্যাচ জিতিয়েই দিয়েছিলেন। ওয়ার্নার আউট হয়ে যাওয়ার পর নাইটরা দুর্দান্তভাবে ম্যাচে কাম ব্যাক করেছিল আবেশ খান এবং মণীশ পান্ডকে পরপর ফিরিয়ে দিয়ে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দিল্লির সাত রান দরকার ছিল। টানটান এই ম্যাচে অক্ষর প্যাটেল দিল্লিকে জিতিয়ে দিয়েছিলেন ২২ বলে ১৯ রান করে।
যাইহোক, হারের হ্যাটট্রিক কাটাতে নাইট্রা মরিয়া হয়ে খেলতে নেমেছিলেন একাদশে চারটে বদল ঘটিয়ে। এন জগদীশন, গুরবাজ রহমনুল্লাহ, শার্দূল ঠাকুর এবং লকি ফার্গুসন এদেরকে এই ম্যাচে বসিয়ে নাইটরা এই দিন লিটন দাস, জেসন রয়, মনদীপ সিং এবং কুলবন্ত খেজুরিওয়ালাকে খেলিয়েছিল। তবে এত পরিবর্তনের পরেও নিট ফল হলো সেই জিরো। একমাত্র নাইটদের জার্সিতে জেসন রয় প্রথম ম্যাচে লড়াই উপহার দিয়ে গেলেন। বাকিরা তো দাগ কাটতেই পারলেন না।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কেকেআর দিল্লির দুরন্ত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। জেসন রয় একা লড়াই চালিয়ে গেলেন। ৪৩ রান করে সাহায্য করেছিলেন দলকে সম্মানজনক রান গড়তে। শেষের দিকে আন্দ্রে রাসেল ৩১ বলে ৩৮ রান না করলে কেকেআর আরো বড় বিপদে পড়তো। শেষ ওভারে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে কোনরকমে কেকেআরকে ১২৭ রানে পৌঁছে দেন রাসেল। মাত্র তিনজন দুই অঙ্কের রান করেছিলেন নাইটদের ইনিংসে। এটাই কেকেআরের ব্যাটিং ব্যর্থতা প্রকট হল।
দিল্লি বোলাররা কখনোই কেকেআরকে সচ্ছন্দে থাকতে দেয়নি। পাওয়ার প্লের মধ্যে কেকেআর তিনটি উইকেট হারিয়ে বসেছিল। তারপর কেকেআর ব্যাটিং সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। একমাত্র জেসন রয়ের সামনে ডেভিড ওয়ার্নাররা কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলেন। তবে কুলদীপ যাদব ১৫ তম ওভারে জেসন রয়কে আউট করে দেন। দুটি করে উইকেট পেয়েছিলেন ঈশান্ত শর্মা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, আনরিখ নর্জে এরা প্রত্যেকেই। মুকেশ কুমার নিয়েছিলেন একটি উইকেট।