Sourav Ganguly BCCI President: ‘আমি অন্য কিছু করতেই পারি!’ গদি হারিয়ে প্রথম মুখ খুললেন ‘মহারাজ’

0
2
Sourav Ganguly BCCI President: 'I can do something else!' 'Maharaj' opened his mouth for the first time after losing the mattress

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি সভাপতিত্ব হারিয়েছেন রাজনীতির শিকারে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে মুম্বই থেকে কলকাতা ফিরেই বেহালার বীরেন রায় রোডের বাড়ি পৌঁছেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। পর দিন সর্বক্ষণ বাড়িতেই ছিলেন। ১৩ই অক্টোবর অর্থাৎ আজ দুপুরে নিজের শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে হাজির ছিলেন ‘মহারাজ’। তিনি আজ থেকে বন্ধন ব্যাংকের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ঘোষিত হলেন ।

বিসিসিআই সভাপতির পদ হারিয়ে ”দাদা” এই প্রথম মুখ খুললেন। তিনি জানিয়ে দিলেন আগামী দিনে আরও বড় কিছু করতেই পারেন!নতুন কোন ইনিংসেরই ইঙ্গিত দিলেন “মহারাজ”নিজের শহরে বসে। তার কথা থেকে এটা প্রকাশ পেল যে ক্রিকেট খেলা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের প্রশাসকের চেয়ারে বসার থেকে।

সৌরভ গাঙ্গুলি এদিন বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে শেষ ওয়ানডে ম্যাচের দিন সকালে আমি জানতে পারি খেলব। তিন সপ্তাহ পর লর্ডসে ছিল আমার প্রথম টেস্ট তাতে আমি শতরান করি। পঙ্কজ রায়ের পর বাংলা থেকে দীর্ঘদিন কেউ ভারতীয় দলের হয়ে খেলেননি। আমি অতীত নিয়ে ভাবতে চাই না কারণ আমি ভবিষ্যতে বাঁচি। শচিন, রাহুল দ্রাবিড়রা একশোর বেশি টেস্ট খেলেছে। ওদের সঙ্গে আমিও খেলেছি। শনিবার লর্ডসের মাঠে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলাম সেই ঘটনাটি এত বছর পরেও ভুলিনি। আমি স্কোরবোর্ডের দিকে তাকাইনি ধাপে ধাপে প্রথমে ২০ ও তারপরে ৩০ এভাবেই এগিয়েছি। বন্ধন ব্যাংকও এভাবেই এগিয়েছে। স্পোর্টসে রাতারাতি সাফল্য আসে না।

এক রাতে কেউ চন্দ্রশেখর ঘোষ, নরেন্দ্র মোদী, শচিন তেন্ডুলকর হতে পারেন না তার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। আমার দৃঢ় মনঃসংযোগ ছিল। পরের বল ও পরের রান নিয়ে ভাবতাম কারণ এটা একটা পদ্ধতি। এই পদ্ধতি বড় ইনিংস গড়ার আত্মবিশ্বাস দেয়। ক্রিকেটে প্রতিদিন শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। কোনদিন কেউ বঞ্চিত হবে বা কেউ সফল হবে কিংবা কেউ ব্যর্থ হবে। কিন্তু যাই হয়ে যাক নিজের উপর দৃঢ় আস্থা রাখতে হবে।

আমি একসময় ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে কাজ করেছি। এখন সেখান থেকে বেরিয়ে এর চেয়েও বড় কিছু করতেই পারি! আমি সিএবি ও বিসিসিআই সভাপতি হয়েছি ঠিকই, কিন্তু আমার খেলোয়াড় জীবনের ১৫ বছরটি সেরা মুহূর্ত ছিল। আমি জানতাম রান করতে হবে দলে টিকে থাকতে গেলে। আমি মানি যে জীবনে বাঁচতে গেলে ধন কুবেরের মত অর্থ ভান্ডার লাগে না।”

সৌরভ গাঙ্গুলী বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসাবেই দায়িত্ব সামলাতে চাই কিন্তু বোর্ডের তরফ থেকে তাঁকে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তিনি সবিনয়ে আইপিএল চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ২০১৯ সালে বিসিসিআই-এর সভাপতি পদে নিয়োগ হয় সৌরভ গাঙ্গুলি। তিনি বিগত তিন বছরে চেয়ারে বসে নিজের ছাপ রেখেছেন। ভারতে দিন-রাতের পিঙ্ক বল টেস্ট আয়োজন করা হোক বা কোভিডের সময় সফল ভাবে আইপিএল আয়োজন করা হোক, সবকিছুই তিনি ঠিকঠাক করেছেন।

সৌরভের গাঙ্গুলীর সিভি-তে রয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা থেকে আরম্ভ করে রেকর্ড অর্থে আইপিএল মিডিয়া সত্ব বিক্রি পর্যন্ত। সৌরভের অনুরোধেই রাহুল দ্রাবিড় ও ভিভিএস লক্ষ্মণ এই দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটার ভারতীয় ক্রিকেটের দুই বড় দায়িত্বে এসেছেন।

এই প্রসঙ্গে সৌরভ বলেন, “আমি সিএবি-তে পাঁচ বছর ও বিসিসিআই-তে তিন বছর সভাপতি হিসাবে কাজ করেছি। এতগুলো বছরে এটা বুঝেছি কিছু জিনিস ত্যাগ করতে হয়। ক্রিকেটারদের অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় । সভাপতির অনেক বেশি অবদান রাখতে হয় সংস্থার জন্য। দলের জন্য ভালো কিছু করতে হয়। আমি প্লেয়ার হিসাবে অনেক বেশি সময়ে ছিলাম, যেটি আমি চুটিয়ে উপভোগ করেছি। বিশ্বে নিজের নাম তৈরি করেছি। সভাপতি হিসাবেও দুর্দান্ত কিছু মুহূর্ত পেয়েছি।

কেউ সারাজীবন খেলতেও পারে না বা কোন সংস্থার সভাপতি হিসাবেও থাকতে পারে না।গত তিন বছরে ভারতীয় ক্রিকেটে অনেক ভালো কিছু হয়েছে। কোভিডের সময় আইপিএল খেলা থেকে আরাম্ভ করে অলিম্পিকে মহিলা ক্রিকেটারদের রুপো জয়। ভারতীয় দল দেশ এবং বিদেশের মাটিতে ভালো খেলেছে। এই ভারতীয় দলের দারুণ প্রাণশক্তি রয়েছে।” এখন সময় সৌরভ গাঙ্গুলী ভবিষ্যতে কোন ইনিংস বেছে নেন সেটি দেখার।