অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন গিল! মাথায় সজোরে বল মারলেন হ্যারি ব্রুক

এজবাস্টন টেস্ট, দিন ৩ – শুবমান গিলের (Shubman Gill) নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল দিনের শুরুতেই আগুনে বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। শুরুতেই মোহাম্মদ সিরাজের বিধ্বংসী স্পেলে…

Shubman Gill

এজবাস্টন টেস্ট, দিন ৩ – শুবমান গিলের (Shubman Gill) নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল দিনের শুরুতেই আগুনে বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। শুরুতেই মোহাম্মদ সিরাজের বিধ্বংসী স্পেলে ইংল্যান্ড শিবিরে নেমে আসে ধস। এক ওভারেই সিরাজ তুলে নেন জো রুট ও অধিনায়ক বেন স্টোকসকে, দু’জনকেই পরপর দুই বলে ফেরান প্যাভিলিয়নে।

মাত্র ১০০ রানের আগেই ইংল্যান্ড হারায় তাদের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। কিন্তু এরপর মাঠে নামেন জেমি স্মিথ। তার আগমনই যেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তার সঙ্গে জুটি বাঁধেন হ্যারি ব্রুক এবং দুই ইংলিশ ব্যাটার ভারতীয় বোলারদের উপর শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ।

প্রথম ধাক্কা সিরাজের আগুনে

দিনের শুরুটা ছিল ভারতের, আর সেই কৃতিত্ব পুরোপুরি মোহাম্মদ সিরাজের। ধারাবাহিক গতির সঙ্গে নিখুঁত লাইন-লেংথ মিশিয়ে সিরাজ তুলে নেন প্রথমে জো রুট এবং পরের বলেই ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসকে। এই ডাবল ব্রেকথ্রু যেন ভারতের জয়ের পথ সুগম করে দিচ্ছিল। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন মাত্র ৯৮/৫, এবং মনে হচ্ছিল, ভারত খুব দ্রুতই ইংলিশ ইনিংস গুটিয়ে দেবে।

জেমি স্মিথের আগমনেই ম্যাচের মোড় ঘোরে

তবে এরপরই আসে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। তরুণ ব্যাটার জেমি স্মিথ মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই নিজের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে চমকে দেন ভারতীয় দলকে। অপেক্ষা না করে তিনি শট খেলতে শুরু করেন এবং দ্রুতই পঞ্চাশ পূর্ণ করেন।

তার সঙ্গী হন হ্যারি ব্রুক, যিনি কিছুটা ধীরগতিতে শুরু করলেও পরে স্মিথের ব্যাটিং দেখে নিজের ছন্দ খুঁজে পান। এই জুটি গড়ে তোলে ১৫০+ রানের পার্টনারশিপ এবং এক সময় ভারতীয় পেসারদের পুরোপুরি বিধ্বস্ত করে দেন।

মাঠে ড্রামা: শুবমান গিলের মাথায় বল

ম্যাচে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় যখন স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা হ্যারি ব্রুককে একটি দ্রুত ডেলিভারি করেন। ব্রুক কাট করতে গিয়ে বলটি স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা ভারত অধিনায়ক শুবমান গিলের দিকে পাঠান।

গিল (Shubman Gill) ক্যাচ ধরার চেষ্টা করেন, কিন্তু বল এত দ্রুত এসেছিল যে তিনি সঠিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেননি। ফলস্বরূপ, বল সরাসরি তার মাথায় লাগে। গিল সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং চোট পেয়ে মাঠে গড়াতে থাকেন।

এই মুহূর্তটি দর্শকদের মধ্যে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়ায়, যদিও পরে জানা যায় গিল গুরুতর আহত নন।

বিরতিতে যাওয়ার আগেই স্মিথের সেঞ্চুরি, ব্রুক ৯১* রানে

জেমি স্মিথ যে ক্ষুব্ধ ছিলেন, তা তার ব্যাটিং-এ স্পষ্ট। তিনি পরপর বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৮২ বলে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তার সেঞ্চুরিতে ছিল ১৪টি চার ও ৩টি ছয়, স্ট্রাইক রেট প্রায় ১২৫।

অপরদিকে, হ্যারি ব্রুকও শতরানের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। লাঞ্চ ব্রেকে যাওয়ার সময় তিনি ছিলেন ৯১* রানে অপরাজিত। ইংল্যান্ড তখন ২৪৯/৫, আগের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে এটি ছিল এক অসাধারণ প্রত্যাবর্তন।

জেমি স্মিথ: দুর্দান্ত আত্মপ্রকাশ

স্মিথের ব্যাটিং শুধু ভারতীয় বোলারদের জন্য মাথাব্যথার কারণই হয়নি, বরং প্রমাণ করেছে কেন তিনি ইংল্যান্ডের ভবিষ্যতের তারকা। তিনি ম্যাচ-পূর্ব সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তিনি ভারতীয় পেসার জসপ্রিত বুমরাহকে ভয় পান। তবে এই টেস্টে বুমরাহ না থাকায় তিনি যেন পুরোপুরি মুক্ত হয়ে খেলেছেন।

তার সাহসী ব্যাটিং ইংল্যান্ড দলকে বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করে লাঞ্চে পৌঁছে দিয়েছে মজবুত অবস্থানে।

ভারতের বোলিং চিন্তা ও ফিল্ডিং ব্যর্থতা

ভারতের দিক থেকে সিরাজের শুরুটা যতটা দুর্দান্ত ছিল, মাঝের ওভারগুলোতে বোলাররা ততটাই নিষ্প্রভ ছিলেন। উমেশ যাদব, শার্দুল ঠাকুর কিংবা জাদেজা – কেউই ব্রুক-স্মিথ জুটিকে চাপে ফেলতে পারেননি।

ফিল্ডিংয়েও বড়সড় ব্যর্থতা দেখা যায়। শুবমান গিলের হাতে ব্রুকের ক্যাচ পড়া শুধু একটি উইকেট মিসই নয়, ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার সুযোগ হারানো।

এজবাস্টনের তৃতীয় দিনে ভারতের শুরুটা যেমন আগ্রাসী ছিল, শেষটা তেমন হতাশাজনক। জেমি স্মিথ এবং হ্যারি ব্রুকের অসাধারণ ব্যাটিং ইংল্যান্ডকে খাদের কিনারা থেকে তুলে এনেছে শক্ত অবস্থানে। চতুর্থ দিনে ভারতের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে এই দুই সেট ব্যাটারকে দ্রুত ফেরানো এবং ইংল্যান্ডকে ৩০০-র নিচে আটকে রাখা। তবে জেমি স্মিথের এই সেঞ্চুরি এবং গিলের মাথায় বল লাগা – দুটোই চতুর্থ দিনের শুরুর আগে আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে।

⚽ ক্রীড়া বিভাগ🔗 লিংক
🏏 ক্রিকেট নিউজCricket News
🔥 আইপিএল ২০২৫IPL 2025
📸 ক্রিকেট ভাইরালCricket Viral
🗣️  ক্রিকেট গসিপCricket Gossip
🏆  চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫Champions Trophy 2025
⚽ ফুটবল নিউজFootball News
🎯  অন্যান্য খেলাধুলাOther Sports