সচীন সৌরভদের মত ভারতীয় দলে ক্রিকেট খেলে আজ চায়ের দোকান চালান প্রকাশ !!

কথায় আছে, পৃথিবীর তাবড় তাবড় নাম গুলি ভাগ্যের পরিহাসের কাছে পরাস্ত। আর অসমের এই ক্রিকেটারের সাথে এমনই কিছু ঘটনা ঘটলো। ২২ গজের এই খেলোয়াড় রাজকীয়ভাবে তার ক্যারিয়ারের সূচনা করেছিলেন। তবে সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ( Sourav Ganguly ) সচিন তেন্ডুলকরের ( Sachin Tendulkar ) সাথে খেলার সুযোগ হয়নি। দুর্ভাগ্যবশত এখন বর্তমানে সে একটি চায়ের দোকানের মালিক। আর অসমের এই প্রাক্তন ক্রিকেটারের নাম হল প্রকাশ ভগৎ ( Prakash Bhagat )। একটা সময় এই ক্রিকেটারের অধিকারে অসামান্য প্রতিভা ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে হ্যাটট্রিকও নিয়েছেন।

তার অসামান্য প্রতিভা দেখার পর একজন নেট বোলার হিসাবে ভারতীয় ক্রিকেট দলে ( Indian Cricket Team ) ক্রিকেটার প্রকাশ ভগৎ ( Prakash Bhagat) ডাক পেয়েছিলেন। একসময় তার স্বপ্ন ছিল যে সেও সুযোগ পাবে ভারতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলার। কিন্তু ভাগ্যের বিড়ম্বনায় অসমের ক্রিকেটার প্রকাশ ভগৎ ( Prakash Bhagat ) ২২ গজ ছেড়ে এখন চা বিক্রেতা। শোনা যায়, ২২ গজে একজন বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে এই প্রতিভাবান ক্রিকেটার আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। এমনকি বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে অসমের অনূর্ধ্ব ১৭ দলের হয়ে বিহারের বিরুদ্ধে তিনি নিজের নামে হ্যাটট্রিক সহ মোট সাতটি উইকেট করেছিলেন।

খেলোয়াড়ের এইরকম প্রতিভা দেখার পর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০০৩ সালে ভারতের সিরিজ খেলার সময় অসমের বাঁ-হাতি স্পিনার প্রকাশ ভগৎ এনসিএ-তে ডাক পান। জানা গিয়েছে, এরপর বেশ কিছুদিন ধরে প্রকাশ ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে অনুশীলন করেছিলেন। এমনকি নেটে অনুশীলন করার সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সচিন তেন্ডুলকারের বিপরীতে তিনি বল করেছিলেন। তার প্রতিভা দেখার পর ভারতীয় দল রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছিলেন। তারপর প্রকাশ ধীরে ধীরে উন্নতির পথে অগ্রসর হচ্ছিলেন। ভারতীয় ক্রিকেটারদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন।

এরপর দীর্ঘ সময় ধরে ২২ গজে বল হাতে প্রকাশ নিজের কেরামতি দেখিয়েছেন। কিন্তু এখনো হয়তো আসল বিপত্তি বাকি ছিল। সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে প্রকাশ ভগতের বাবার মৃত্যু হয়েছিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তারপর প্রকাশের কাঁধে সংসারের পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে। সেই সময় দিশেহারা হয়ে গিয়ে তিনি শিলচরে দাদার চা-এর দোকানে গিয়ে বসেন। একজন ক্রিকেটার থেকে চা-ডালপুরি বিক্রেতা হয়ে উঠলেন। কিন্তু সেই সময় নেওয়া সিদ্ধান্ত আজও তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। প্রকাশ একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এক সময় যারা তার সাথে রাজ্যস্তরে খেলতো, কোথাও না কোথাও তারা সকলেই প্রতিষ্ঠিত। এখনো পর্যন্ত তিনিই জীবন যুদ্ধে জর্জরিত।’ কিন্তু স্বাভাবিকভাবে এই মন্তব্য সামনে আসার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সেখানে প্রায় সকলেই খেলার দারুন সরকারি চাকরি প্রাপ্ত করেছে। সেখানে প্রকাশের সাথে কেন দ্বিচারিতা। তবে সকল ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে জল এনেছে খেলোয়াড়ের এই জীবন যুদ্ধের কাহিনী সামনে আসার পর।