‘আমিও তো মানুষ’, বলার পরে তার বদলে রায়ডু-কে দিয়ে IPL ট্রফি উঠিয়ে ধোনি বোঝালেন তিনি অন্য মানুষ

হোয়াটস্যাপ গ্রুপ জয়েন
Google News Follow

বৃষ্টির জন্য রবিবার নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আইপিএল ২০২৩-এর ফাইনাল ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ ডে-তে। যদিও সোমবারও আমদাবাদে বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল এবং সেই সম্ভবনা সত্যি প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয়বার মাঠ পরিদর্শনের পরে জানিয়ে দেন আম্পায়াররা। খেলা হবে ১৫ ওভার। ওভার কমায় বদলে যায় চেন্নাইয়ের জয়ের টার্গেট। জয়ের জন্য ধোনিদের দরকার ১৭১ রান। সুতরাং, ১৪.৩ ওভারে চেন্নাইয়ের দরকার আরও ১৬৭ রান। ৪ ওভারের পাওয়ার প্লে। ৫ জন বোলার সর্বাধিক ৩ ওভার করে বল করতে পারবেন। ৫ অথবা ৬ ওভারের পরে নেওয়া যাবে প্রথম টাইম-আউট। ১০, ১১ অথবা ১২ ওভারের পরে নেওয়া যাবে দ্বিতীয় টাইম-আউট।

আজ ফাইনালে ধোনি যেখানে গোল্ডেন ডাক করেছেন সেখানে শেষ দুই বলে ১০ রান বাকি এমন অবস্থায় ছক্কা ও চার মেরে গোটা মরশুমে ভক্তরা যার আউট হওয়ার প্রার্থনা করেছেন তিনি মসিহা হয়ে তাদের হিরো মহেন্দ্র সিংহ ধোনির হাতে নিজের পঞ্চম আইপিএল ট্রফি তুলে দিলেন। টুর্নামেন্টে চলাকালীন এমনটাও শোনা গিয়েছিল যে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে রবীন্দ্র জাদেজার মনকষাকষি চলছে। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচে দুজনকে মাঠের মধ্যেই তর্কাতর্কি করতে দেখা গিয়েছিল। তবে ফাইনালের দিন ম্যাচ জেতানোর আনন্দে তাকে কোলে তুলে নিলেন ধোনি নিজেই। ম্যাচ জয়ের পেছনে ডেভন কনওয়ে (৪৭), অজিঙ্কা রাহানে (২৭), আইপিএলে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা আম্বাতি রায়ডুর (১৯) অবদানও কম ছিল না। ১৫ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৭১ রান তুলে ফের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয় সিএসকে। এই নিয়ে পাঁচবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয় সিএসকে। তারা সব থেকে বেশিবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নিরিখে মুম্বইয়ের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলে।

ধোনি বলেছেন, “এই ভালবাসাতে আপনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়বেনই। চেন্নাইয়ের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার সময় গোটা স্টেডিয়াম আমার নাম ধরে চিৎকার করছিল। তখন সত্যি আমার চোখ পুরো জলে ভরে গিয়েছিল। কিছু ক্ষণের জন্য ডাগআউটে চুপচাপ বসেছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম, আমাকে এটা উপভোগ করতে হবে। আসলে ওরা আমি যেমন, তেমন ভাবেই আমাকে ভালবাসে। আমি এমন কিছু কখনও দেখাতে যাই না যেটা আমি নই। সব কিছু সহজ রাখার চেষ্টা করি।আমি নিজেও হতাশ হয়ে পড়ি। আমি তো একটা মানুষ। কিন্তু প্রত্যেকের কাছে চাপ সামলানোর আলাদা আলাদা উপায় রয়েছে। আমার দলে অজিঙ্কের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছে। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই। আমার দলে কারও কোনও ব্যাপারে দ্বিধা থাকলে, সে অনায়াসে প্রশ্ন করতে পারে। সেই দরজা সব সময় খোলা রয়েছে।”

নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নাম আম্বাতি রায়ডুকে নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি বলেন, “ও কিছুটা আমার মতোই, বেশি ফোন ব্যবহার করে না। আমি জানতাম আজকের রাতটা ও বিশেষ করে তোলার জন্য কিছু করবে। রায়ডুর অন্যতম একটা বৈশিষ্ট্য হল, ও মাঠে থাকলে সব সময় নিজের ১০০ শতাংশ দেবে। কিন্তু ও দলে থাকলে আমরা কোনও দিন ফেয়ারপ্লে পুরস্কার জিততে পারব না। অনেক দিন ধরে রায়ডুর সঙ্গে খেলছি। সেই ভারত এ সফরের সময় থেকে। ও এমন ক্রিকেটার যে পেস এবং স্পিন সমান ভাবে খেলতে পারে। এটা সত্যিই একটা বিশেষ গুণ। আমার আগেই মনে হয়েছিল ও আজকের ম্যাচে কিছু একটা করবে। আসলে ও-ও আমার মতো। খুব একটা ফোন ব্যবহার করে না। আশা করি জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে ও ভাল ভাবেই উপভোগ করবে।” এরপর যখন ট্রফি টি তুলতে চান অধিনায়ক হিসেবে তখন নিজে একা না গিয়ে আম্বাতি রায়ডু এবং অসম্ভব পরিস্থিতি থেকে আনা রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে গিয়ে তাদের দিয়েই ট্রফি তোলান।

স্বাভাবিকভাবেই এরপর তাকে নিজের অবসর নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তখন ধোনি বলেন, “সব দিক বিবেচনা করে দেখলে এটাই অবসর ঘোষণার জন্য সেরা সময়৷ এখন আমার জন্য সহজ কাজ হল সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অবসর নেওয়া। কিন্তু কঠিন কাজটা হলে নয় মাস কঠোর পরিশ্রম করে আরও একটা আইপিএল খেলা। শরীরকে সেটার জন্য সাই দিতে হবে। তবে সিএসকে সমর্থকদের কাছ থেকে যেই ভালবাসা আমি পেয়েছি, সেটা আমি তখনই ফিরিয়ে দিতে পারব যদি আরও একটা মরশুম খেলতে পারি।”