KL Rahul: বুধবার রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে কেএল রাহুলকে (KL Rahul) যেভাবে সর্বসমক্ষে অপদস্থ হতে হয়েছে তাতে ক্রিকেট খেলার কর্পোরেটকরণ নীতি নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার যিনি কয়েকদিন আগেও বিশ্বকাপে দেশের জার্সিতে প্রতিনিধিত্ব করে তুলকালাম পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন, তাঁকে এভাবে লাঞ্ছিত করার কোনও অধিকার রয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের, তা নিয়ে বড়সড় আলোচনার মহল তৈরি হয়েছে। বিস্তারিত জেনে নিন Kheladhular Jogot-এর এই প্রতিবেদনে।
ক্রিকেট খেলার যাঁর কার্যত কোনও অভিজ্ঞতাই নেই, স্রেফ অর্থ বলে ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক হয়ে কোনও ক্রিকেটারকে অসম্মান করার অধিকার কি তাঁর রয়েছে? ক্রিকেট মহলের একাধিক বিশেষজ্ঞ এই ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মাঠে হায়দরাবাদের কাছে কার্যত কোনও পাত্তাই পায়নি লখনৌ। একসময় তিন নম্বরে থাকা দল হঠাৎ করেই হারতে হারতে ছয় নম্বরে নেমে গিয়েছে।
প্লে অফ সম্ভাবনায় বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে LSG ফ্র্যাঞ্চাইজি। তাই আবেগের উদ্গীরন হওয়া মোটেই অস্বাভাবিক নয়। তবে সেটার অশোভনীয়ভাবে সর্বসমক্ষে কেন, সেটাই প্রশ্ন করছেন অনেকে। একদিন আগেই দিল্লি ক্যাপিটালস মালিক পার্থ জিন্দাল যেভাবে VIP বক্স থেকে সঞ্জু সামসনের (Sanju Samson) আউটের সময় চিৎকার শুরু করেছিলেন, তাতে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরেই ম্যাচ শেষে পার্থ জিন্দাল সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছেন রাজস্থান মালিক মনোজ বাদালে এবং অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতার মাধ্যমে।
সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একবার শিরোনামে IPL মালিকানা। দলে বিনিয়োগ থাকে, লাভ ক্ষতির ব্যাপার থাকে। সেই আর্থিক বিষয়টি বোধগম্য। তবে তাঁর এমন নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ হবে? একজন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক যখন প্রকাশ্যে ধমক দেন কেএল রাহুল মাপের কোনও এক ক্রিকেটারকে তখন জল্পনা উঠতে বাধ্য দলের সবকিছুই ঠিক রয়েছে কিনা! ২০২২-এ সঞ্জীব গোয়েঙ্কার RPSG গ্রুপ ৭০৯০ কোটি টাকা খরচ করে কিনেছিলেন।
কেএল রাহুল (KL Rahul ) প্ৰথম দুই সিজনেই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলকে দুবার-ই প্লে অফে পৌঁছে দিয়েছেন। তবে এবার কেএল রাহুলের সময় মোটেও ভাল যায়নি। ১২ ম্যাচে ১৩৬ প্লাস স্ট্রাইক রেট নিয়ে ৪৬০ রান করেও T-20 বিশ্বকাপগামী দলে জায়গা করে নিতে পারেননি। প্লে অফে ওঠার লড়াইয়ে লখনৌ মোটেও সুবিধাজনক জায়গায় নেই। লিগ টেবিলে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন কেএল রাহুলরা। যা ইঙ্গিত তাতে লখনৌ ফ্র্যাঞ্চাইজি গোটা দল আগামী সিজনে আমূল বদলে ফেলতে পারে।
তবে ঘটনা হল, কেএল রাহুলের মাপের আন্তর্জাতিক তারকার আগেও মালিক হিসাবে বিতর্ক কুড়িয়েছেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। চেন্নাই এবং রাজস্থান নির্বাসন থাকার সময় পুনে সুপার জায়ান্টস-এর মালিক ছিল RPSG গ্রুপ। সেই সময়েও মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) মত কিংবদন্তিকেও অধিনায়কত্ব থেকে ছেঁটে ফেলতে পিছপা হননি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। ধোনিকে সরিয়ে নেতা করে দেওয়া হয়েছিল স্টিভ স্মিথকে (Steve Smith) । যা তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।
পরে নিজের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সঞ্জীব গোয়েঙ্কা সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, “মিডিয়া যা খুশি তা বলতেই পারে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও যা খুশি তাই লেখা হতে পারে। সমস্ত কিছুকেই আমি সম্মান করি। সমস্ত ধরণের মতাদর্শকেই সম্মান করি। প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত (ধোনিকে সরিয়ে স্মিথকে ক্যাপ্টেন করা) কেন নেওয়া হল, মনে হয় না, এই নিয়ে জন মতে আলোচনার অবকাশ রয়েছে। কখনও কখনও এরকম সিদ্ধান্ত মোটেও জনপ্রিয় হয় না। তবে এটা হয়েই থাকে।”
“কখনই ১৫-১৬ বছর অধিনায়কত্ব করা ব্যক্তির সঙ্গে সবেমাত্র শুরু করা ব্যক্তির তুলনা হয় না। আমাদের মনে হয়েছে আমরা তরুণ অধিনায়ককে নিয়ে চলতে চাই।”