অনেকেই তো ফুটবল ভক্ত হন। স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখেন গাঁটের কড়ি খরচ করে। আবার নিজের দলের হয়ে গলাও ফাটান। কিন্তু তা সত্ত্বেও মাঠে কিছু দর্শক নিজেদের ছাপ রেখে যান। যারা ফুটবলের সুন্দর পরিবেশকে ফুটবলের পাশাপাশি ধরে রাখতে সমান ভূমিকা পালন করেন। কাতার বিশ্বকাপ(Qatar World Cup) এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকলো। মাঠের ভিতরে শুধু নয়, জাপানিরা মাঠের বাইরেও মন জিতলেন। ম্যাচ শেষে জয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসে না গিয়ে তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করলেন গোটা স্টেডিয়াম।
বুধবারের হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে জাপান হারিয়ে দিয়েছে চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানদের। অনেকের মতে যা অঘটন। তবে গতিশীল ফুটবল আর হার না মানা মানসিকতা গোটা বিশ্বের মন জিতেছে। আর জাপানিদের স্পোর্টসম্যান স্পিরিট, পরিছন্নতা ও সমাজ সচেতনতাবোধ মাঠের বাইরে মন জিতেছে, ম্যাচ শেষে জার্মানি গ্যালারিতে তাদের নিজেদের সভ্যতার ছাপ ছেড়ে গেলেন। মন ভরিয়ে মাঠ ছাড়লেন ফুটবলাররা। আর ঝাঁ চকচকে অবস্থায় সমর্থকরা স্টেডিয়াম ছাড়লেন।
গ্যালারিতে বসে ম্যাচ দেখতে দেখতে দর্শকরা নানান ধরনের খাবার-দাবার খান। গ্যালারির আসনের চারপাশে প্যাকেট ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে। গ্যালারি নোংরা হওয়ার কথা খেলার উত্তেজনায় দর্শকদের আর তখন মাথাতেই থাকে না। কিন্তু বুধবার ছবি দেখে বোঝার উপায় নেই খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে, এই গ্যালারিতে সমর্থকদের ওঠাবসা, নাচানাচি, খাওয়া-দাওয়া আর ছিল জার্মানিকে হারিয়ে দেওয়ার উল্লাস। বিশ্বকাপের অন্যতম বড় অঘটন ঘটানোর উচ্ছ্বাসের মধ্যেও জাপানিরা নিজেদের স্বচ্ছ মনের পরিচয় দিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিও ম্যাচ শেষ হতে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যাচ্ছে জাপানি দর্শকরা নিজেরাই গ্যালারিতে পড়ে থাকা প্লাস্টিক আবর্জনা সাফ করছে।
তবে নতুন নয় এ দৃশ্য। জাপানি সমর্থকরা পুরনো অভ্যাস বশত গ্যালারি পরিষ্কার করলেন। এর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে জাপানি সমর্থকদের দেখা গিয়েছিল একই কাজ করতে। এটাই বিশ্ব মানচিত্রে নিঃসন্দেহে জাপানের সবথেকে ভালো বিজ্ঞাপন হয়ে থাকলো। নিঃশব্দে এই ছবি অনেক শিক্ষা দিয়ে গেল। এই দৃশ্য মনের মণিলতা ধুয়ে-মুছে সাফ করে দেওয়ার মতো। শিখলো তো বাকিরা?