Cricket News

গৌতম গম্ভীর ভারতের মুখ্য নির্বাচক হলে বিরাট কোহলির পাশপাশি এই তারকার কেরিয়ারেও পড়বে পূর্ণচ্ছেদ !!

সম্প্রতি একটি বেসরকারী চ্যানেলের স্টিং অপারেশনের ঘটনায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মা। আর এর ফলে বিসিসিআই-এর বিরাগভাজন হন তিনি।এই কারনে পরবর্তী সময়ে ইস্তফা দিতেও বাধ্য করা হয় তাঁকে। চেতন শর্মা সরে যাওয়ার পর থেকে এখনও অবধি মুখ্য নির্বাচকের চেয়ার ফাঁকা। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব সামলাচ্ছেন শিবসুন্দর দাস।

আইপিএল ও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ পর পর হওয়ায় তা নিয়ে এতদিন ব্যস্ত ছিল ভারতীয় বোর্ড। আর সেই কারনেই নতুন করে এই পদের জন্য আবেদনপত্র জমা নিয়ে উঠতে পারে নি তারা। তবে বর্তমানে এই দুটি বড় প্রতিযোগিতাই মিটে গেছে। তাই আবারও বোর্ডের তরফে মুখ্য নির্বাচক পদে যোগ্য ব্যক্তিকে বেছে নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে নির্বাচক হিসেবে গৌতম গম্ভীরকে জায়গা দেওয়ার ভাবনা চিন্তা চলছে বর্তমানে।

প্রাক্তন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর দল কে চালিত আগে করেননি তা কিন্তু নয়। এর আগে তিনি লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের মেন্টর হিসেবে দুই বছর কাজ করেছেন।লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের হয়ে গম্ভীরের দুর্দান্ত ম্যান ম্যানেজমেন্টের কথা মাথায় রেখে তাঁর কাঁধে এবার জাতীয় দলের দায়িত্ব দিতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এমনটাই শোনা যাচ্ছে।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে গত নভেম্বর মাসে যখন চেতন শর্মা ও তাঁর প্যানেলকে ছেঁটে ফেলেছিলো,সেই সময় নয়া আবেদনপত্র জানানোর আমন্ত্রণপত্রও প্রকাশ করা হয়েছিলো।এই আমন্ত্রণপত্রে স্পষ্ট করে লেখা ছিলো ইচ্ছুক প্রার্থীর যোগ্যতার মান।বিসিসিআই এক ট্যুইট করে ঘোষনা করেছে যে তারা নির্বাচক পদে নতুন নিয়োগের জন্য আবেদনপত্র প্রত্যাশা করছে। আবেদনকারীর যোগ্যতা জানানো হয়েছে,আবেদনকারীকে নূন্যতম ৭ টি টেস্ট বা ৩০ টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ কিংবা ১০ টি ওয়ান ডে এবং ২০ টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে হবে।

ক্রিকেট থেকে অন্তত ৫ বছর আগে রিটায়ার করা প্রয়োজন। বিসিসিআই এর এই সবকটি যোগ্যতামানেই সসম্মানে উত্তীর্ণ হবেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর। ভারতের জাতীয় দলের জার্সিতে তিন ধরনের ক্রিকেট ফর্ম্যাটেই তিনি দাপটের সঙ্গে খেলেছেন।২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপ, ২০১১-র একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন তিনি। ভারতের হয়ে ৫৮ টেস্টে তিনি করেছেন ৪১৫৪ রান,১৪৭ একদিনের ম্যাচে করেছেন ৫২৩৮ রান এবং ৩৭ টি-২০ ম্যাচে করেছেন ৯৩২ রান।

সুতরাং আবেদন করতে কোনোরকম বাধা নেই তাঁর। ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০১১ একদিনের বিশ্বকাপ ফাইনালের নায়ক গৌতম গম্ভীর,তিনি যদি মুখ্য নির্বাচক হন তাহলে জাতীয় দলে বিরাট কোহলিকে যে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। মাঠে হোক বা মাঠের বাইরে-একে অন্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগা থেকে পিছিয়ে থাকেন না দুজনেই। ধারাভাষ্যকার বা বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিরাটের খুব ছোটো খাটো ভুলগুলোও ভয়ংকর তিরষ্কার করে বসেন গম্ভীর। ২০১৩ সালের আইপিএল চলাকালিন প্রথমবারের মতো দুজনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে।

মাঝে দশ বছর কেটে গেছে তবে তাদের সম্পর্কের বরফ যে গলে নি তা আবার দেখা গেলো ২০২৩-এর আইপিএলে এসে।২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মাঝামাঝি অবধি ব্যাট হাতে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে কোহলিকে। যথেষ্ট রান আসছিলো না তাঁর ব্যাটে। এই সময়কালে গম্ভীরকে বিরাটের ব্যাটিং-এর তীব্র সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছিলো।গম্ভীর যদি মুখ্য নির্বাচক হন তাহলে অফ ফর্মে থেকেও দলে ‘অটোমেটিক চয়েজ’ হিসাবে আর জায়গা পাবেন না বিরাট।গম্ভীরের শাসনে তার জায়গা নিতে পারে তরুন ক্রিকেটাররা, যেমন- রিঙ্কু সিং, তিলক বর্মা বা যশস্বী জয়সওয়ালরা।গম্ভীর সবসময়ই তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তারকা সংস্কৃতিকে উপড়ে ফেলে কথা বলেছেন।

জাতীয় দলের জার্সিতে গত কয়েক মাস যাবৎ নিজেকে অপরিহার্য্য করে তুলেছেন তরুন ফাস্ট বোলার মহম্মদ সিরাজ।হায়দ্রাবাদের এই পেস বোলারের টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মাটিতে খুব ভালো পারফর্ম্যান্স ছিলো।প্রথম দিকে অবশ্য সীমিত ওভারের ক্রিকেটের চেয়ে লাল বলেই বেশি সাফল্য ছিল তার।যদিও ২০২২-এর শেষের দিকে এসে থেকে সাদা বলেও নিজের জাত চেনান সিরাজ। বর্তমানে তার র‍্যাঙ্কিং ২। টি-টোয়েন্টি খেলাতেও নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন সিরাজ। চলতি বছরের আইপিএলে তিনি পাওয়ার প্লেতে অত্যন্ত ভালো মানের বোলিং করেছেন। আইপিএলে উইকেট তোলার সাথে সাথে রানের গতিও রুখেছেন প্রায় ম্যাচেই।

সিরাজ ফর্মে থাকলেও গম্ভীর দলের নির্বাচকের ভূমিকায় আসলে তার আন্তর্জাতিক কেরিয়ারেও সমস্যা হতে পারে। ব্যক্তিগত ভাবে সিরাজের সাথে বিরাট কোহলির অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলেন সিরাজও।আর এসব কারনেই গম্ভীরের চক্ষুশূল হতে পারেন তিনিও। বল হাতে একটি ভুল পদক্ষেপই তার জায়গা করে দিতে পারে গম্ভীরের বাদের খাতায়।

Back to top button