IPL 2023 : অর্ধেক আইপিলেই ইতিহাস, ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’-র জন্য সর্বাধিকবার পার ২০০-র গণ্ডি ?

হোয়াটস্যাপ গ্রুপ জয়েন
Google News Follow

সবে মাত্র ৪০ টি ম্যাচ হয়েছে। তাতেই সর্বাধিকবার ২০০ বা তার বেশি রানের ওঠার রেকর্ড ভেঙে গেল একটি আইপিএলের মরশুমে। ২০২৩ সালে দলগত স্কোর ২০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে গেছে ২০ বার। গত বছর সেই সংখ্যাটা ১৮ ছিল। আইপিএলের ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়মের জন্য কি সেটা হচ্ছে? অনেকে সেটাই মনে করছে। তাদের মত অনুযায়ী, এমনিতেই প্রতিটি দলের ব্যাটিং লাইন আপের গভীরতা টি-টোয়েন্টিতে একটু বেশি থাকে। তাই এবার যেহেতু
‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’-র (বাড়তি ব্যাটার নিয়ে নামছে প্রথমে ব্যাটিং করা দল, ফিল্ডিংয়ের বোলার পরে নামাচ্ছে, প্রথমে ফিল্ডিং করা দল উল্টো করছে) নিয়ম চালু হয়েছে, তাই একজন বাড়তি ব্যাটার থাকছে প্রত্যেকটি দলের হাতে। কোন দল শুরুর দিকে উইকেট হারালেও দমছে না। বরং ব্যাটারা আক্রমণাত্মক ছন্দ বজায় রাখছে। এর ফলে বোলারদের কাজ কঠিন হয়েছে। শেষই হচ্ছে না ব্যাটারের সংখ্যা। আর ৪০টি ম্যাচেই ২০বার ২০০ রানের গণ্ডি পার হয়ে গিয়েছে।

‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’-র গুরুত্ব

১) রাজস্থান রয়্যালস বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: প্রথমে ব্যাট করে রাজস্থান রয়্যালস ২০৩ রান তুলেছিল ৫ উইকেট হারিয়ে। বোলারকে নামানো হয়েছিল যশস্বী জয়সওয়ালকে তুলে নিয়ে। তিনি ৩৭ বলে ৫৪ রান করেছিলেন।

২) চেন্নাই সুপার কিংস বনাম লখনউ সুপার জায়েন্টস: প্রথমে ব্যাট করে চেন্নাই ২১৭ রান করেছিল। আম্বাতি রাইডুকে তুলে নিয়ে পেসার তুষার দেশপাণ্ডেকে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসাবে নামানো হয়েছিল। রাইডু ১৪ বলে ২৭ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে লখনউ ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসাবে আয়ুষ বাদোনিকে নামিয়ে ছিল। তিনি ১৮ বলে ২৩ রান করেছিলেন। ২০৫ রান তুলেছিল লখনউ।

৩) কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম রয়্যালস চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর: কেকেআর প্রথমে ব্যাট করে ২০৪ রান তুলেছিল। তবে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে যে ব্যাটারকে বোলিংয়ের সময় তুলে নেওয়া হয়েছিল, অবশ্য সেই ভেঙ্কটেশ আইয়ার রান পাননি।

৪) গুজরাট টাইটানস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স: গুজরাট ২০৪ রান তুলেছিল প্রথমে ব্যাট করে। ২০৭ রান তুলে কেকেআর ম্যাচ জিতে গিয়েছিল। প্রথমে ব্যাটিংয়ের সময় গুজরাট সাই সুদর্শনকে খেলিয়েছিল। তিনি ৩৮ বলে ৩৫ রান করেছিলেন। তাকে তুলে নিয়ে গুজরাট ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নামিয়েছিল। আর ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে কেকেআর ভেঙ্কটেশকে নামিয়ে ছিল। তিনি ৪০ বলে ৮৩ রান করেন।

৫) রয়্যালস চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর বনাম লখনউ সুপার জায়েন্টস: আরসিবি প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২১২ রান তুলেছিল। এক উইকেটে লখনউ জিতে গিয়েছিল। তবে আরসিবির দলের যে চারজন ব্যাট করেছিলেন, তাদের মধ্যে থেকে কাউকে তুলে নিয়ে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নামানো হয়নি। অন্যদিকে, লখনউ ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে বাদোনিকে নামিয়ে ছিল। ২৪ বলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ৩০ রান করেছিলেন।

৬) সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স: সানরাইজার্স ২২৮ রান তুলেছিল হ্যারি ব্রুকের ৫৫ বলে ১০০ রানের সুবাদে। তাকে তুলে নিয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরকে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে নামানো হয়েছিল। ২০০ রানে গণ্ডি কেকেআর পেরিয়ে গেলেও আইয়ার ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে রান পাননি।

৭) চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রয়্যালস চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর: চেন্নাই প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২২৬ রান তুলেছিল। রাইডুকে তুলে নিয়ে বলার আকাশ সিংকে নামানো হয়েছিল ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে। ছয় বল খেলে রাইডু ১৪ রান করেছিলেন। ম্যাচের ক্ষেত্রে সেটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ আরসিবি আট রানে জিতেছিল। আবার সুয়াশ প্রভুদেশাইকে আরসিবি ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে নামিয়েছিল। তিনি ১১ বলে ১৯ রান করেন।

৮) পঞ্জাব কিংস বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাঞ্জাব ২১৪ রান তুলেছিল। যে প্রভসিমরন সিংকে তুলে নিয়ে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ তুলে নেওয়া হয়েছিল বোলিংয়ের সময়, ১৭ বলে ২৬ রান করেন সেই প্রভসিমরন। মুম্বাই ২০১ রান তুললেও প্রথম বলে আউট হয়ে গিয়েছিলেন রোহিত শর্মাদের ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নেহাল ওয়াধেরা।

৯) চেন্নাই সুপার কিংস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স: প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাই ২৩৫ রান তোলে। তবে যারা চেন্নাই হয়ে ব্যাট করেছিলেন, তাদের মধ্যে থেকে কাউকে তুলে নিয়ে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নামানো হয়নি।

১০) গুজরাট টাইটানস বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: প্রথমে ব্যাট করে গুজরাট টাইটান্স ২০৭ রান তুলেছিল। শুভমান গিল ৩৪ বলে ৫৫ রান করেন। তাকে তুলে নিয়ে গুজরাট ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নামিয়েছিল।

১১) কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম রয়্যালস চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর: নাইট ব্রিগেড প্রথমে ব্যাট করে পুরো ২০০ রান তুলেছিল। জেসন রয়কে তুলে নিয়ে কেকেআর ‘ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে সুয়াশ শর্মাকে নামিয়েছিল। আর ২৯ বলে ৫৬ রান করেন জেসন রয়।

১২) রাজস্থান রয়্যালস বনাম চেন্নাই সুপার কিংস: রাজস্থান ২০২ রান তুলেছিল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে। শিমরন হেতমায়ারকে বোলিংয়ের সময় তুলে নেওয়া হয়েছিল। তিনি অবশ্য ব্যাট হাতে রান পাননি।

১৩) লখনউ সুপার জায়েন্টস বনাম পঞ্জাব কিংস: প্রথমে ব্যাট করতে নেমে লখনউ তুলেছিল ২৫৭ রান। ২৪ বলে ৫৫ রান করেন কাইল মায়ার্স। লখনউ ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নামিয়েছিল তাকে তুলে নিয়ে। অন্যদিকে, রান পাননি পঞ্জাবের ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ প্রভসিমরন। তবে পাঞ্জাব ২০০ রানের গণ্ডি পার করেছিল।

একটি মরশুমে দলের সর্বাধিক ২০০ রান বা তার বেশি স্কোর

১) ২০২৩ সাল: ২০ বার (৪০ টি ম্যাচ)।

২) ২০২২ সাল: ১৮ বার।

৩) ২০২৩ সাল: ১৫ বার।

আইপিএলে একটি ম্যাচে সর্বোচ্চ রান
১) চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রাজস্থান রয়্যালস: ৪৬৯ রান, চেন্নাই, ২০১০ সাল।

২) পঞ্জাব কিংস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স: ৪৫৯ রান, ইন্দোর, ২০১৮ সাল।

৩) পঞ্জাব কিংস বনাম লখনউ সুপার জায়েন্টস: ৪৫৮ রান, মোহালি, ২০২৩ সাল।

৪) মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম পঞ্জাব কিংস: ৪৫৩ রান, মুম্বই, ২০১৭ সাল।

৫) রাজস্থান রয়্যালস বনাম পঞ্জাব কিংস: ৪৪৯ রান, শারজা, ২০২০ সাল।

আইপিএলের একটি ম্যাচে সর্বাধিক বাউন্ডারির সংখ্যা (চার ও ছক্কা মিলিয়ে)

১) চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রাজস্থান রয়্যালস: ৬৯ বাউন্ডারি, চেন্নাই, ২০১০ সাল।

২) পঞ্জাব কিংস বনাম লখনউ সুপার জায়েন্টস: ৬৭ বাউন্ডারি, মোহালি, ২০২৩ সাল।

৩) পঞ্জাব কিংস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স: ৬৭ বাউন্ডারি, ইন্দোর, ২০১৮ সাল।

৪) ডেকান চার্জার্স বনাম রাজস্থান রয়্যালস: ৬৫ বাউন্ডারি, হায়দরাবাদ, ২০০৮ সাল।