আইপিএল ২০২৪ক্রিকেট নিউজফুটবলক্রিকেট গসিপঅন্যান্য খেলাধুলা

IPL 2023 : মুম্বইয়ে ফুচকা বিক্রি থেকে রেকর্ড গড়ে IPL-এ শতরান, সত্যিই ‘যশস্বী’ হলেন জয়সওয়াল !!

আগেও প্রতিভার ঝলক দেখা গিয়েছে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেই প্রতিভা পূর্ণতা পেল। রবিবার যশস্বী জয়সওয়াল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৬২ বলে ১২৪ রান করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কয়েক ...

Updated on:

আগেও প্রতিভার ঝলক দেখা গিয়েছে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেই প্রতিভা পূর্ণতা পেল। রবিবার যশস্বী জয়সওয়াল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৬২ বলে ১২৪ রান করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কয়েক বছর আগে মুম্বাইয়ে ফুচকা বিক্রি করে যে ছেলেটা সংসার চালাতেন, কোনরকমে আজাদ ময়দানের তাঁবুতে মাথা গুঁজে দিন পার করতেন, সেই ছেলেটা নিজেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে নিয়ে যেতে প্রস্তুত। সেই সাথে তিনি বিশ্বের কোটি কোটি তরুণ প্রতিভাদের বার্তা দিলেন, লড়াই চালিয়ে যেতে হবে – কাউকে বেশিদিন বা কাউকে কম দিন। কিন্তু সাফল্য আসবে লড়াইটা চালিয়ে গেলে। আর সেই সাফল্যের দিনে কুর্নিশ করতে বাধ্য হবে গোটা দুনিয়া।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

অবশ্য রবিবার রাত থেকে যশস্বীর সেই সাফল্যের যাত্রাটা শুরু হয়নি। ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছিল। ছোট্ট-ছোট্ট পা ফেলতে শুরু করেছিলেন তিনি।সান্তাক্রুজের কোচ জ্বালা সিং ছোট্ট যশস্বীর প্রতিভার সন্ধান পেয়েছিলেন। তার অধীনেই যশস্বী খেলতে শুরু করেছিলেন। জ্বালা নিখাদ রত্ন চিনতে ভুল করেননি, সেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল ২০১৫ সালে। মুম্বাইয়ের স্কুল ক্রিকেট লিগে পরপর ম্যাচে তিনি ভালো খেলতে থাকেন। ঘরোয়া ক্রিকেট মহলের নজর কাড়তে থাকেন। একটি ম্যাচে অপরাজিত ৩১৯ রান করার পাশাপাশি তিনি ৯৯ রানে ১৩ টি উইকেট নিয়েছিলেন। লিমকা বুক অফ রেকর্ডসেও সেই পারফরম্যান্স ঠাঁই পায়। সেই সাথে মুম্বাইয়ের অনূর্ধ্ব-১৬ তিনি ডাক পেয়েছিলেন। মুম্বাইয়ের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ স্তরে নিয়মিত খেলেছেন তিনি।

তারইমধ্যে যশস্বী ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ডাক পেয়েছিলেন। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে তিনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। টুর্নামেন্টের সেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও সেই ছন্দ ধরে রেখেছিলেন। সেই বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হেরে গেলেও এক নতুন রত্ন পায় ভারত। মাত্র ছটি ম্যাচ খেলে যশস্বী ৪০০ রান করেছিলেন। সেই সাথে একটি শতরান এবং চারটি অর্ধশতরান হাঁকিয়ে ছিলেন। তিনি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তারপর আর যশস্বীকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

তবে সেই বিশ্বকাপের কয়েকদিন আগেই যশস্বী উত্তরপ্রদেশের ভাদোহি থেকে মুম্বইয়ে এসেছিলেন নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য। কালবাদেবীতে একটি দোকানে তিনি কাজ করতেন। কিন্তু তাকে সেই দোকান থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যশস্বী নিজের স্বপ্ন ভেঙে যেতে দেননি। টাকা না থাকায় তিনি মাঠকর্মীদের সাথে দাদারের আজাদ ময়দানের তাঁবুতে থাকতে শুরু করেছিলেন। নিজের খরচ চালানোর জন্য তিনি ফুচকা বিক্রি করতেন (মুম্বইয়ের ভাষায় পানিপুরি)। পরবর্তীতে যশস্বী বলেছেন, ‘যে পথ আমি হেঁটে এসেছি, আমার সাথে সেটা চিরকাল থাকবে।’

যশস্বী বললেন, ‘এখনো আমার সেই ভাবনা চিন্তাই আছে। আমি একই রকম থাকবো। আমার জীবনে কোনরকম বড়সড় পরিবর্তন হয়নি। আর সেটা আমি পরিবর্তন করতেও চাই না। এতদিন ধরে আমি যেভাবে এগিয়েছি, সেই ভাবেই এগিয়ে যেতে থাকবো। আমি জানি কতটা কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে। তাই এরকমই থাকবো আমি। নিজেকে আমি চিনি। অত্যন্ত আশীর্বাদধন্য আমি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ক্রিকেটকেও ধন্যবাদ।’

যশস্বী জয়সওয়ালের কেরিয়ার

২০১৮-১৯ মরশুমে যশস্বীর অভিষেক হয় মুম্বাইয়ের রঞ্জি ট্রফিতে। মাত্র ১৫ টি ম্যাচ খেলে তিনি ১৮৪৫ রান করেছেন। তার গড় সংখ্যা ছিল ৮০.২১। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ইতিমধ্যেই তিনি ৯টি শতরান এবং ২টি অর্ধশতরান করেছেন। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসাবে তিনি দ্বিশতরানের রেকর্ড গড়েছেন। আইপিএলের একটি ইনিংসে আনক্যাপড খেলোয়াড় হিসেবে যশস্বী সর্বোচ্চ রানের নজির গড়েন‌।

About Author
2.