অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচে পার্থ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দেখা গেল এক অনন্য দৃশ্য। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ঠিকই, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার তীব্র গতির পেসার মিচেল স্টার্ক প্রথম দিনেই ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দিয়ে ম্যাচের চিত্র বদলে দেন। ম্যাচের প্রথম ঘণ্টা থেকেই মিচেল স্টার্কের এমন আগ্রাসী বোলিং করেন যেন ব্যাটসম্যানদের দিকে আগুনের গোলা ছুড়ে দিচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৫৮ রান খরচায় ৭ উইকেট নিয়ে তিনি নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং বিশ্লেষণ ছুঁড়ে দেন।
ইনিংসের প্রথম বল থেকেই স্টার্ক যে ধরণের ছন্দে ছিলেন, তা বোঝা যাচ্ছিল যে ইংল্যান্ডের দিনটি সহজ হবে না। নিজের প্রথম ওভারেই তিনি ইংল্যান্ডের ওপেনার জ্যাক ক্রলিকে কভারে উসমান খোয়াজার হাতে ক্যাচ করিয়ে দেন। তখনও ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে কোনো রান ওঠেনি। ম্যাচের শুরুতেই পাওয়া এই আঘাত ইংলিশ ব্যাটিংয়ের ভিত কাঁপিয়ে দেয়।
লাঞ্চের আগে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন স্টার্ক। তিনি বেন ডাকেটকে ফুল-লেংথ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করেন এবং শূন্য রানে থাকা জো রুটকে স্লিপে মার্নাস লাবুশেনের হাতে ক্যাচ করিয়ে দেন। রুটের উইকেটটি ছিল স্টার্কের অ্যাশেজ ক্যারিয়ারের ১০০তম শিকার, যা তাঁকে লিজেন্ডারি গ্লেন ম্যাকগ্রা ও ডেনিস লিলির সঙ্গে একটি বিশেষ ক্লাবে জায়গা করে দেয়।
দুরন্ত ছন্দে মিচেল স্টার্ক
দ্বিতীয় সেশনে স্টার্ক আরও বেশি বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। ইনিংসের মাত্র শুরুতেই ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকসকে বোল্ড করে তিনি চতুর্থ উইকেট তুলে নেন। এরপর হ্যারি ব্রুক ও জেমি স্মিথ মিলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ তা স্থায়ী হতে পারেনি। ব্রুককে ব্রেনডন ডগেট আউট করলে চাপ আবার ইংল্যান্ডের ওপর ফিরে আসে। এর পরে স্টার্ক আবার তার আগুনে স্পেলে ফিরে এসে লোয়ার অর্ডার দ্রুত ভেঙে ফেলেন।
অস্ট্রেলিয়ার এই পেসার একের পর এক নিখুঁত লাইন-লেন্থে সুইং ও গতি মিলিয়ে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করে রাখেন। তার বোলিংয়ের সামনে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং যেন দিশাহীন হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের ইনিংস ১৭২ রানে গুটিয়ে যায়, যেখানে স্টার্ক একাই ৭টি উইকেট শিকার করেন। এটি তার ক্যারিয়ারের সেরা ফিগার—আগের সেরা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯ রানে ৬ উইকেট, যা তিনি কিংসটনে করেছিলেন।
এছাড়াও প Perth ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এটিও তার সর্বোচ্চ বোলিং পারফরম্যান্স। উল্লেখযোগ্য যে, ২১ শতকে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনো অজি বোলার ঘরের মাঠে অ্যাশেজের একটি ইনিংসে ৭ উইকেট নিলেন। ১৯৯০-৯১ মৌসুমের পর এটাই প্রথমবার কোনো অস্ট্রেলিয়ান বোলার অ্যাশেজ টেস্টের প্রথম দিনেই ৭ উইকেট দাবি করলেন। সেই মৌসুমে একই মাঠে ক্রেগ ম্যাকডারমট ৮ উইকেট নিয়েছিলেন।
৭ উইকেট নিয়ে কীর্তিমান রচনা মিচেল স্টার্কের
এছাড়া আরও একটি বিশেষ রেকর্ড গড়েছেন স্টার্ক—অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ঘরের মাঠে সবচেয়ে বেশি চার বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার তালিকায় তিনি ক্রেগ ম্যাকডারমটকে পেছনে ফেলেছেন। ম্যাকডারমট যেখানে ২১ বার এই কৃতিত্ব দেখান, স্টার্ক এখন ২২ বার এই মাইলফলক স্পর্শ করে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন। তালিকার শীর্ষে আছেন কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন, যার নামে রয়েছে ৩৬বার চার বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড।
প্রথম দিন শেষে ম্যাচের চিত্র পুরোপুরি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে চলে গেছে। মিচেল স্টার্কের এই বিধ্বংসী বোলিং শুধু ইংলিশ শিবিরকেই চাপে ফেলেনি, বরং অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টেই এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে। স্টার্কের আগুনে স্পেল আবারও প্রমাণ করে দিল, লাল বলে তিনি বিশ্বের অন্যতম ভয়ঙ্কর পেসার, আর অ্যাশেজ তো যেন তার বিশেষ পছন্দের মঞ্চ।
READ ALSO; দলের বাইরে সারফরাজ- আকাশ চোপড়ার তোপ নির্বাচকদের বিরুদ্ধে!
| ⚽ ক্রীড়া বিভাগ | 🔗 লিংক |
|---|---|
| 🏏 ক্রিকেট নিউজ | Cricket News |
| 🔥 আইপিএল ২০২৫ | IPL 2025 |
| 📸 ক্রিকেট ভাইরাল | Cricket Viral |
| 🗣️ ক্রিকেট গসিপ | Cricket Gossip |
| 🏆 চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ | Champions Trophy 2025 |
| ⚽ ফুটবল নিউজ | Football News |
| 🎯 অন্যান্য খেলাধুলা | Other Sports |
