England vs South Africa: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংল্যান্ড সবসময় ব্যাটিং গভীরতার জন্য পরিচিত। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। মাত্র ১৪৭ বলে অলআউট হয়ে গেল ইংল্যান্ড দল, যা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাদের চতুর্থ সর্বনিম্ন স্কোর। পুরো ইনিংসের ব্যাটিংকে সংক্ষেপে বলা যায়—একঘেয়েমি, অমনোযোগী শট এবং ক্লান্তি, যার বড় কারণ ছিল দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টে টানা এক মাস খেলা।
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ব্যর্থতা: শুরুটা ভালো হলেও পতন অবধারিত
ইনিংসের প্রথম দিকে আশা জাগিয়েছিলেন জেমি স্মিথ ও জো রুট। শুরুতেই স্মিথ বার্গারের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে টানা দুটি বাউন্ডারি মেরে আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিলেন। অন্যদিকে বেন ডাকেটও লুঙ্গি এনগিডিকে চার মেরে রান তোলার গতি বাড়িয়েছিলেন।
কিন্তু বার্গারের সুইং সামনে এগিয়ে খেলা ডাকেটের বিপক্ষে কাজ করে গেল। পায়ের মুভমেন্ট ছাড়া এক ঢিলে ড্রাইভ খেলতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর রুট তার স্বভাবসুলভ এলিগ্যান্ট ড্রাইভে রান তুললেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। এনগিডির বলে স্ল্যাশ করে এজ দেন, যদিও রায়ান রিকেলটন চমৎকার ডাইভ দিয়ে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ক্যাচটি লুফে নেন।
স্মিথ ও হ্যারি ব্রুকের জুটি (৩৮ রান) তখন কিছুটা আশা জাগাচ্ছিল। স্মিথ মারতে থাকেন একের পর এক বাউন্ডারি, আর ব্রুকও প্রথম বলেই চার মেরে নিজের আগ্রাসন দেখান। পাওয়ারপ্লে শেষে স্কোর ছিল ৫৭/২—দেখে মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড শক্ত লড়াই দেবে।
টার্নিং পয়েন্ট: রান আউট ও স্মিথের উইকেট (England vs South Africa)
ইনিংসের ভাগ্য ঘুরে যায় ১৫তম ওভারে। ব্রুক কভার অঞ্চলে বল ঠেলে দুই রান নিতে গিয়েছিলেন, কিন্তু দ্বিতীয় রান মোটেই সম্ভব ছিল না। ট্রিস্টান স্টাবসের সোজাসুজি থ্রো রিকেলটনকে রান আউটের সুযোগ দেয়, আর ব্রুককে ফিরতে হয় মাত্র ২১ রানে।
তারপরও ইংল্যান্ড ভরসা রাখছিল স্মিথের ব্যাটে, যিনি নিজের টানা দ্বিতীয় ওডিআই ফিফটি তুলেছিলেন। কিন্তু বিপদ এল উইয়ান মুল্ডারের ওভারে। ফাইন লেগে ফ্লিক মারতে গিয়ে করবিন বোশের একহাতি দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন স্মিথ। এখান থেকেই শুরু হয় ইংল্যান্ডের ধ্বস।
সাত উইকেট ২৯ রানে: মহারাজ ও মুল্ডারের বিধ্বংসী আক্রমণ
শেষ ৪৩ বলে ইংল্যান্ডের পতন লজ্জাজনক।
- জ্যাকব বেতেল: মহারাজের ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে এজ দিয়ে ফিরলেন।
- উইল জ্যাকস: সহজ রিটার্ন ক্যাচ তুলে দিলেন মহারাজকে।
- জস বাটলার: ভারসাম্যহীন ড্রাইভে মুল্ডারের বলে কিপারের হাতে ক্যাচ।
- জোফ্রা আর্চার: পরের বলেই মার্করামের হাতে স্লিপে ক্যাচ—মুল্ডার হ্যাটট্রিকের কাছে গিয়েছিলেন।
- আদিল রশিদ: এলবিডব্লিউ মহারাজের বলে।
- সননি বেকার: ডেবিউতে বোল্ড হয়ে যান মহারাজের গুগলিতে।
এইভাবে ইংল্যান্ড ২৪.৩ ওভারে মাত্র ১৪৭ বলে ১৪৭ রানে অলআউট হয়ে যায়।
Keshav Maharaj: 4/22
Wiaan Mulder: 3/33South Africa have bowled England out for just 131 in the 1st ODI !! 🔥#ENGvSA #ENGvsSA pic.twitter.com/thdWndSoBH
— Cricketism (@MidnightMusinng) September 2, 2025
দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্দান্ত বোলিং পরিকল্পনা
এই ম্যাচে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন কেশব মহারাজ (৪ উইকেট)। সাম্প্রতিক সময়ে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের এক নম্বর ওডিআই বোলার হয়েছেন তিনি, আর তার বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
উইয়ান মুল্ডার (৩/৩৩)-ও সমান কার্যকরী। এটি তার ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো তিন উইকেট শিকার। প্রথম দিকে বোলাররা কিছুটা চাপে থাকলেও, অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার ধৈর্য এবং আক্রমণাত্মক ফিল্ড সেটিং ফল দিয়েছে।
সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক ছিল ক্যাচ ধরা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে ক্যাচ মিসের খেসারত গুনতে হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে, কিন্তু আজ তারা ৭টির মধ্যে সবকটিই ধরেছে।
ইংল্যান্ডের ব্যর্থতার মূল কারণ
১. অমনোযোগী শট – ডাকেট, রুট, ব্রুক, জ্যাকস—সবার আউটই সফট ডিসমিসাল।
২. টানা খেলার ক্লান্তি – দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার পর মাত্র ৪০ ঘণ্টার মধ্যে আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ফলে ফ্রেশনেসের অভাব স্পষ্ট।
৩. স্পিন সামলাতে অক্ষমতা – মহারাজ ও নুর আহমেদকে সামলাতে গিয়ে বিপদে পড়েছে মিডল অর্ডার।
৪. রান নেওয়ার ভুল সিদ্ধান্ত – ব্রুকের রান আউটই মূলত চাপ বাড়িয়ে দেয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার আত্মবিশ্বাসের জায়গা
এই জয় দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য শুধুই একটি জয় নয়, বরং আত্মবিশ্বাস ফেরানোর বড় সুযোগ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারের পর তারা দেখাল দলগত প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার প্রভাব কতটা গুরুত্বপূর্ণ। শারজাহ থেকে ব্রিসবেন উড়ে এসে পুরো স্কোয়াড একসঙ্গে প্রস্তুতি নিয়েছিল, যার সুফল আজ মাঠে মিলল।
ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ওডিআই ২০২৫ ম্যাচ ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে করিয়ে দিল যে, শুধুমাত্র তারকাখচিত ব্যাটিং লাইনআপ থাকলেই যথেষ্ট নয়। টিমওয়ার্ক, কন্ডিশন অনুযায়ী প্রস্তুতি, এবং ধারাবাহিক ক্যাচিং—এই তিন দিকেই দক্ষিণ আফ্রিকা এগিয়ে ছিল।
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ধস শুধু পরিসংখ্যানের পাতায় নয়, তাদের ভবিষ্যতের জন্যও একটি সতর্কবার্তা। ব্যস্ত সূচি ও ক্লান্তি সামলাতে না পারলে বড় টুর্নামেন্টে এমন বিপর্যয় আরও ঘন ঘন দেখা যেতে পারে। অন্যদিকে, কেশব মহারাজ ও উইয়ান মুল্ডারের অসাধারণ বোলিং দক্ষিণ আফ্রিকাকে আবারও বড় মঞ্চে আত্মবিশ্বাসী করে তুলল।
অবশ্যই দেখবেন: টসে জিতে আগে ব্যাটিং আফগানিস্তান! পাকিস্তানের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ কি?
⚽ ক্রীড়া বিভাগ | 🔗 লিংক |
---|---|
🏏 ক্রিকেট নিউজ | Cricket News |
🔥 আইপিএল ২০২৫ | IPL 2025 |
📸 ক্রিকেট ভাইরাল | Cricket Viral |
🗣️ ক্রিকেট গসিপ | Cricket Gossip |
🏆 চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ | Champions Trophy 2025 |
⚽ ফুটবল নিউজ | Football News |
🎯 অন্যান্য খেলাধুলা | Other Sports |